শুল্কায়ন জটিলতায় মংলা বন্দরের জেটিতে খোলা আকাশের নীচে ৫ বছর ধরে পড়ে আছে প্রায় দু'হাজার আমদানিকৃত রিকন্ডিশন গাড়ি। বিগত ২০১০ সাল থেকে মংলা বন্দর জেটিতে পড়ে থাকা গাড়িগুলো ছাড় করাতে আমদানিকারকরা অনীহা প্রকাশ করে চলেছেন। আমদানির পর এক মাস পর্যন্ত বন্দরে রাখার বিধান থাকলেও এতো বছর ধরে বন্দর জেটিতে পড়ে থাকায় গাড়িগুলোতে দেখা দিয়েছে যান্ত্রিক ত্রুটি।
মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সূত্রে জানা যায়, শুল্কায়ন জটিলতার কারণে বিগত ২০১০ সাল থেকে মংলা বন্দরে ১ হাজার ৯শ' গাড়ি পড়ে আছে। এসব রিকন্ডিশন গাড়ি শুল্কায়নের জটিলতায় মংলা বন্দর থেকে ছাড় করাতে আমদানিকারকরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। গাড়ি আমদানিকারকরা এ জটিলতার জন্য কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছেন।
গাড়ি আমদানিকারকদের সংগঠন বারভিডা'র সভাপতি মো. আব্দুল হামিদ শরিফ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে গাড়িগুলো মংলা বন্দর জেটিতে পড়ে থাকায় ইতিমধ্যে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছে। গাড়িগুলোর শুল্কায়নে এনবিআর সিদ্ধান্ত নিতে বিলম্ব করায় গাড়ি ছাড় করাতে এ অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, আইনের মধ্যে থেকে ব্যবসায়ীদের ছাড় দিয়ে তাদের পুঁজি রক্ষা করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এ জটিলতার নিরসন করতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এ্যাডমিরাল রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, গাড়ি থাকায় বন্দরের কোন সমস্যা হচ্ছে না। আমরা স্পেস রেন্টে ভাড়া পাচ্ছি। যদিও গাড়ি আমদানি হওয়ার পর থেকে এক মাস পর্যন্ত বন্দরে রাখার বিধান রয়েছে। বিষয়টি কাস্টমস ভালো বলতে পারবে। তবে সচেতন নাগরিক হিসেবে আমি চাই এ জটিলতার নিরসন হোক। তবে ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমার এই জটিলতা নিরসনের উদ্যোগ নিয়েছেন। আশা করছি অচিরেই এ জটিলতার নিরসন হবে।
অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা গাড়িগুলো পুলিশের ব্যবহারের জন্য স্থানান্তরের প্রস্তাব করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে। এদিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভায় গাড়িগুলোর শুল্ক-কর নির্ধারণ করে ৪ মাসের মধ্যে খালাসের নির্দেশ দেওয়া হয়। তা না হলে খালাস ব্যর্থ গাড়িগুলো আইনানুগভাবে নিলাম বিক্রির ব্যবস্থা হবে।
সরকারের সিদ্ধান্ত এবং বন্দরের গাড়ি শুল্কায়নের জটিলতা বিষয়ে বার বার যোগাযোগ করেও মংলা কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিডি-প্রতিদিন/০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/ এস আহমেদ