কাস্পিয়ান সাগরের জলরাশি আগে যেখানে ছিল, সেখানে এখন ফাটল ধরা মাটি আর সাদা পাথরের স্তূপ। বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্থলবেষ্টিত হ্রদ ‘কাস্পিয়ান সাগর’ পানি শুকিয়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন। পরিবেশবিদরা এ বিষয়ে অনেক আগে থেকেই সতর্ক করে আসছেন।
কিন্তু তেল উত্তোলন, অপ্রত্যাশিত চুক্তি ও উদাসীন নীতির কাছে প্রকৃতি হার মেনেছে। সাগরের পানি ইতিমধ্যে প্রায় ১০০ মিটার সরে গেছে। এপ্রিল মাসে ‘ন্যাচার’ ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়, চলতি শতাব্দীর শেষে কাস্পিয়ান সাগরের পানির স্তর ১৮ মিটার পর্যন্ত কমে যেতে পারে। এতে সাগরের আয়তন হারাবে প্রায় ৩৪ শতাংশ। এমনকি মাত্র ৫ থেকে ১০ মিটার পানির স্তর কমে গেলেই চরম হুমকির মুখে পড়বে স্থানীয় বাস্তুতন্ত্র। বিশেষ করে কাস্পিয়ান সিল ও স্টারজনের মতো স্থানীয় প্রাণী প্রজাতির অস্তিত্ব।
রাশিয়া, কাজাখস্তান, তুর্কমেনিস্তান, ইরান ও আজারবাইজানের মাঝে অবস্থিত কাস্পিয়ান সাগরকে বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্থলবেষ্টিত জলরাশি। এটি ‘মিডল করিডোর’র অংশ, যা চীন থেকে ইউরোপে পণ্য পরিবহনের দ্রুততম রুট। একই সঙ্গে এটি বিশাল এক জ্বালানির ভাণ্ডার।
অনেকেই আশঙ্কা করছেন, কাস্পিয়ান সাগরের পরিণতিও যেন অ্যারাল সাগরের মতো না হয়। সোভিয়েত আমলে অতিরিক্ত নদীর পানি তুলেই অ্যারাল সাগর প্রায় শুকিয়ে যায়। এখন এটি তার আসল আয়তনের মাত্র ১০ শতাংশ জায়গা দখল করে আছে।
গবেষকেরা বলছেন, শুধু জলবায়ু পরিবর্তন নয় কাস্পিয়ানের সংকটে বড় ভূমিকা রেখেছে রাশিয়ার পানি ব্যবস্থাপনা। সাগরের প্রায় ৮০-৮৫ শতাংশ পানি আসে রাশিয়ার ভলগা নদী থেকে। ভলগা ইউরোপের দীর্ঘতম নদী। এ নদীতে বহু বাঁধ ও জলাধার তৈরি করে কৃষিকাজ ও শিল্পের জন্য। ব্যাপক হারে পানি ব্যবহারের কারণে নদীর প্রবাহ অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম