চলতি অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে প্রসাধনী পণ্যের ন্যূনতম শুল্কায়ন মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানোর প্রস্তাবের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ কসমেটিকস অ্যান্ড টয়লেট্রিজ ইম্পোটার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিটিআইএ)।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে সংগঠনের নেতারা বলেন, এই অবান্তর শুল্কনীতি বৈধ আমদানিকে নিরুৎসাহিত করবে, চোরাচালান বাড়াবে, বাজারে নকল ও মানহীন পণ্যের দৌরাত্ম্য তৈরি করবে এবং প্রায় ২৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হুমকির মুখে পড়বে।
সংগঠনের সভাপতি মো. জহিরুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘বর্তমানে প্রসাধনী পণ্যের উপর নির্ধারিত ন্যূনতম শুল্কায়ন মূল্য আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি। এতে বৈধ আমদানির পথ বন্ধ হয়ে যাবে এবং সরকার রাজস্ব হারাবে। পাশাপাশি বাজারে সয়লাব হবে নকল ও নিম্নমানের পণ্যে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেখানে বিলাসবহুল রোলস রয়েস গাড়ির শুল্কহার ৮৯.৩২ শতাংশ, সেখানে নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রসাধনী পণ্যের শুল্কহার ১৮৪ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে-এটি নিছক বৈষম্য নয়, স্বাধীন ব্যবসার প্রতিও একটি চরম অবিচার।’
বিসিটিআইএ’র সাধারণ সম্পাদক মো. সাহিদ হোসেন বলেন, ‘এই বাজেট প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টার কর্মসংস্থান বৃদ্ধির লক্ষ্যের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিখ্যাত কিল ব্র্যান্ডের টি ট্রি ফেসওয়াশের পাইকারি মূল্য যেখানে মাত্র ০.৬১ ডলার, সেখানে বাংলাদেশে এর উপর ন্যূনতম শুল্কায়ন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে আন্তর্জাতিক মূল্যের প্রায় তিনগুণ বেশি।’
তিনি হুঁশিয়ার উচ্চারণ করে বলেন, ‘এই অযৌক্তিক মূল্যনীতি বজায় থাকলে রাজস্ব না বাড়িয়ে বরং রাজস্ব ফাঁকি, ভুল ঘোষণা এবং চোরাচালান বাড়বে। ইতোমধ্যে সিলেটে বিজিবি ৭ কোটি টাকার চোরাই প্রসাধনী পণ্য জব্দ করেছে, যা আমাদের শঙ্কাকে সত্য প্রমাণ করে।’
বক্তারা বলেন, অতিরিক্ত শুল্কের বোঝা কেবল ব্যবসায়ীদের নয়, দেশের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত জনগণের ওপরও সরাসরি প্রভাব ফেলবে, যারা মূলত এসব পণ্যের প্রধান ভোক্তা। এছাড়া, শুল্কবৃদ্ধির কারণে দেশ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা পাচারও বাড়বে, যা দেশের রিজার্ভ পরিস্থিতিকে আরও সংকটাপন্ন করে তুলবে।
মানববন্ধনে বিসিটিআইএ’র নেতৃবৃন্দ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত প্রসাধনী ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন। বক্তারা সরকারের প্রতি অনতিবিলম্বে বর্তমান শুল্কায়ন কাঠামো পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান এবং শুল্কহার বাস্তবভিত্তিক ও সহনীয় পর্যায়ে নির্ধারণের জোর দাবি জানান।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত