দেশের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং অনলাইনে কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য আগামী এক মাসের মধ্যে অভিন্ন নবম ওয়েজ বোর্ড ঘোষণার জোর দাবি জানিয়েছে সাংবাদিক, শ্রমিক ও কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গনে আয়োজিত এক মহাসমাবেশে সাংবাদিক নেতারা এ দাবি জানান।
ঐক্য পরিষদ নেতারা বলেন, সরকারি কর্মকর্তা, বিচারবিভাগ, আইন পরিষদসহ সরকারের বিভিন্ন স্তরে বেতন ভাতা বৃদ্ধির ফলে গণমাধ্যম কর্মীরা বেতন বৈষ্যমের শিকার হয়েছে। এক মাসের মধ্যে নতুন ওয়েজ বোর্ড ঘোষণা না দিলে সাংবাদিকরা বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন।
একই সাথে নেতারা বিভিন্ন গণমাধ্যমে বকেয়া বেতন ভাতা পরিশোধ ও বোনাস প্রদান, চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের পাওনা টাকা পরিশোধ ও প্রতিটি গণমাধ্যমে কর্মরতদের চাকরির নিয়োগপত্র প্রদানের দাবি জানান।
নেতৃবৃন্দ দৈনিক বর্তমান ও দৈনিক ডেসটিনির সম্পাদক মালিকদের মুক্তি দাবি করে বলেন, আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের বিচার করার ব্যাপারে কোনো দ্বিমত নেই। কিন্তু বিনাবিচারে তাদের বছরের পর বছর কারাগারে আটক রাখায় ওই দুটি প্রতিষ্ঠানের গণমাধ্যম কর্মীরা বিনা বেতন না পেয়ে খুবই মানবেতর জীবন যাপন করছে।
বাংলাদেশ ফেডারেল ইউনিয়ন অব নিউজপেপার প্রেস ওয়ার্কার্স (প্রেস ফেডারেশন) সভাপতি আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল। তিনি বলেন, যে সমাজে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, বিচারপতি সবাই বাস করে সে সমাজে সাংবাদিকরাও বাস করে। ইতোমধ্যে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিচারপতি, সংসদ সদস্য, সরকারি চাকরিজীবীসহ সবার বেতন বৃদ্ধি পেয়েছে। তাহলে ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নের জন্য সাংবাদিকদের কেন বছর বছর আন্দোলন করতে হবে। ওয়েজবোর্ড শুধু বেতন নয় সাংবাদিকদের সম্মানেরও বিষয়।
বিএফইউজের মহাসচিব ওমর ফারুক বলেন, আগামী এক মাসের মধ্যে নবম ওয়েজ বোর্ড ঘোষণা না করা হলে দেশব্যাপী সফরের মাধ্যমে ইউনিটগুলো থেকে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। তিনি বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিক হত্যকাণ্ডের দ্রুত বিচারও দাবি করেন।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি শাবান মাহমুদ ৯ম ওয়েজবোর্ড নিয়ে কটূক্তি করায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতির সমালোচনা করে তার বক্তব্য প্রত্যাহারের জন্য ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেন।
তিনি বলেন, ওয়েজবোর্ড সাংবাদিকদের রুটি-রুজি, মর্যাদার বিষয়। এ নিয়ে যারাই ষড়যন্ত্র করুক তাদের সাংবাদিকদের গণশত্রু হিসেবে ঘোষণা করা হবে। অনলাইন, ইলেকট্রনিক মিডিয়া, রেডিও’র জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের পাশাপাশি ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নের দাবি জানান তিনি। ঈদের আগে বকেয়া বেতন, চাকরিচ্যুতদের সার্ভিস বেনিফিট প্রদান, চাকরিচ্যুতি বন্ধ ও ৯ম ওয়েজবোর্ড ঘোষণার আল্টিমেটাম দেন এ নেতা।
ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরীর সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান চৌধুরী, সাবেক মহাসচিব আব্দুল জলিল ভূইয়া, আজিজুল হক ভু্ইঁয়া, বিএফইউজে কোষাধক্ষ্য মধুসুদন মন্ডল, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ, ডিইউজে সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শাহজাহান মিয়া, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মফিজুর রহমান বাবু, জনকল্যাণ সম্পাদক উম্মুল ওয়ারা সুইটি, দফতর সম্পাদক মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল, ডিইউজে কার্যনিবার্হী কমিটির সদস্য লিটন হায়দার, মাহমুদুর রহমান খোকন, নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা মিনু, সিনিয়র সাংবাদিক কার্তিক চ্যাটার্জি, কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারন সম্পাদক কামরুল ইসলাম, বাংলাদেশ সংস্থা সংস্থা বাসস কর্মচারী ইউনিয়ন নেতা কামারুল হক, কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম, দীপক চন্দ্র রায়, প্রেস কর্মচারী ইউনিয়ন সিনিয়র সহ-সভাপতি গোলাম সারওয়ার আলম।
বিডি-প্রতিদিন/ এস আহমেদ