বর্তমান সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে বিএনপি-জামায়াত গভীর ষড়যন্ত্র করছে। তারা গণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতায় যাওয়ার পথ থেকে সরে গিয়ে বিদেশিদের দ্বারস্থ হয়ে নানা ষড়যন্ত্র করছে। বিএনপি দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় যেতে চায়। মোসাদের সঙ্গে বিএনপি নেতা আসলামের বৈঠক ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে তুরস্কের সমালোচনা একই ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক চক্রান্ত রুখে দাঁড়াতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সমাজের বিশিষ্টজন, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব। সোমবার 'রাজনীতিতে ষড়যন্ত্র ও বাংলাদেশের নিরাপত্তা' শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে তারা এসব কথা বলেন।
ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা ‘মোসাদ’-এর সঙ্গে বিএনপি নেতার কানেকশনকে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র আখ্যায়িত করে বক্তারা বলেন, মোসাদ কানেকশন আমাদের রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আইএসআইয়ের পরে মোসাদ, এটা বুঝতে হবে ষড়যন্ত্র কোথা থেকে হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যারা বিশ্বাসী, গণতন্ত্রে যারা বিশ্বাসী তারা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বাধীনতার মূল্যবোধকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। দেশে বিরোধী সব ষড়যন্ত্র রুখতে হবে।
রাজধানীর একটি হোটেলে এ গোলটেবিলের আয়োজন করে রিজিওনাল অ্যান্টি টেরোরিস্ট রিসার্স ইনস্টিটিউট (রাত্রি)। বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রিজিওনাল অ্যান্টি টেরোরিস্ট রিসার্স ইনস্টিটিউট (রাত্রি) নির্বাহী পরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আলী শিকদার (অব.)। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জিনাত হুদা।
গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য দেন ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান এ কে আজাদ চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান, মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সাবেক চেয়ারম্যান আহাদ চৌধুরী, কর্নেল জাফর ইমাম (অব.) বীর-বিক্রম, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. মীজানুর রহমান, নোয়াখালী বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. এম অহিদুজ্জামান, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ওলিউর রহমান, প্রধান তথ্য কমিশনার মো. জমির, ইশফাক এলাহী, অধ্যাপক মেজবা কামাল, অধ্যাপক সাদেকা হালিম, ড. এম এ হাসান, অধ্যাপক মাকছুদ কামাল, হাসান তারেক চৌধুরী, শোলাকিয়ার ইমাম মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ, অধ্যাপক মোরশেদ রহমান, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি সাধারণ সম্পাদক ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল আবদুর রশিদ (অব.), অধ্যাপক জিয়াউর রহমান, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব আবেদ খান, মনজুরুল আহসান বুলবুল, মোজাম্মেল বাবু, শ্যামল দত্ত, রানা দাস গুপ্ত, অ্যাডভোকেট কে এম আমিন উদ্দিন, স্বদেশ রায়, ব্যারিস্টার আহসান হাবিব প্রমুখ।
বক্তারা বলেছেন, যে দল ধারাবাহিক সহিংসতার মধ্য দিয়ে জনসমর্থন হারিয়েছে তারা বিদেশিদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় যেতে চাইবে সেটাই তো স্বাভাবিক। সরকার যখন তার উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যায় তখন শত্রুরা ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেয়।
তারা বলেন, মোসাদের সঙ্গে বিএনপি নেতা আসলামের সাক্ষাত্ ও যুদ্ধাপরাধী ইস্যুতে তুরস্কের বিবৃতির যে ধরন তা থেকেই বোঝা যায় সবগুলো ষড়যন্ত্র একসূত্রে গাঁথা। বিএনপি ক্ষমতালিপ্সা থেকে বিদেশিদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে যাচ্ছে। ষড়যন্ত্রের বিপদ হলো ক্ষমতার পালা বদলে গণতান্ত্রিক উপায়ের বাইরের উপায় খুঁজলেই দেশের জন্য তা ঝুঁকিপূর্ণ। যে রাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো যোগাযোগ নেই সে রাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনকে হালকা করে দেখার সুযোগ নেই। ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা পরিবর্তনের যে প্রচেষ্টা জনগণ সেটাকে প্রতিহত করবে।
অনেকে বলেন, এই ষড়যন্ত্র জাতির জন্য অশনিসংকেত। ইসলামকে ব্যবহার করে যারা রাজনীতি করতে চান তারা কী বুঝতে পারেন ইসরায়েলে একটা সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র এবং এখন যে এই দেশের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে সে ক্ষেত্রে সেইসব রাজনৈতিক দলগুলো চুপ কেন? আসলামের এই ষড়যন্ত্রের বিচার চেয়ে তারা বলেন, এখানে সাক্ষ্য-প্রমাণের কিছু নেই। উভয়পক্ষ স্বীকার করেছে যে তারা বৈঠক করেছে।
বিডি-প্রতিদিন/ এস আহমেদ