চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) দক্ষিণাঞ্চল থেকে হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি হয় ৫ হাজার ৪৮২ মেট্রিক টন। যার বাজারমূল্য ৭৪৯ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে একই সময় চিংড়ি রপ্তানি হয় ৪ হাজার ৩৯৮ মেট্রিক টন। যার বাজারমূল্য ৫৬৫ কোটি টাকা। গত তিন মাসে আগের অর্থবছরের তুলনায় রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ১৮৪ কোটি টাকা বেশি।
তবে ডলারের মূল্যবৃদ্ধিতে একে ‘সাময়িক লাভজনক চিত্র’ বলে দাবি করছে রপ্তানিকারকরা। তাদের মতে রপ্তানির পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে কমছে। যেহেতু ডলারের দাম বেড়েছে তাই তুলনামূলক কম চিংড়ি রপ্তানি করেও টাকার অঙ্ক বেশি পাওয়া যাচ্ছে। তারা চিংড়ি রপ্তানি বৃদ্ধিতে পরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।
খুলনা মৎস্য পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা লিপটন সরদার জানান, ২০২১-২২ অর্থবছর থেকে পর পর চিংড়ি রপ্তানিতে ধস নামে। করোনা পরিস্থিতি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ অবস্থায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। কিন্তু সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বাজারে স্থিতিতাবস্থার কারণে দক্ষিণাঞ্চল থেকে বাগদা-গলদার রপ্তানি বাড়তে শুরু করেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রথম তিন মাসেই লাভজনক চিত্র দেখা গেছে।
জানা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে দক্ষিণাঞ্চলে খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা থেকে হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি হয় ২৪ হাজার ১০৪ মেট্রিক টন। যার বাজারমূল্য ছিল প্রায় ২৬১১ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে চিংড়ি রপ্তানি হয় ১৯ হাজার ৯০৫ মেট্রিক টন। যার বাজারমূল্য ২৪১২ কোটি টাকা। আর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে চিংড়ি রপ্তানি হয় ১৫ হাজার ৪৫১ মেট্রিক টন। যার বাজারমূল্য ১৭৪৪ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক এস হুমায়ুন কবীর বলেন, টানা তিন বছরে হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। উৎপাদন ও চাহিদা হ্রাসের কারণে চিংড়ি প্রক্রিয়াকরণ অনেক কারখানাও বন্ধ হয়ে গেছে। তবে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে কম চিংড়ি রপ্তানি করেও টাকার অঙ্ক বেশি দেখা যাচ্ছে। এটি প্রকৃত চিত্র নয় বলে তিনি দাবি করেন।
চিংড়ি রপ্তানিকারক মো. আবদুল বাকি জানান, চিংড়ি উৎপাদন ও রপ্তানি বাড়াতে সরকারকে সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ভেনামি চিংড়ি উৎপাদন ও ক্লাস্টার পদ্ধতিতে চাষাবাদে (১০-১৫ জন চাষি একসঙ্গে পোনা আমদানিসহ উৎপাদন করবেন) সাড়া পাওয়া গেছে। এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হলে চিংড়ি রপ্তানি বাড়বে।