বঙ্গোপসাগর-ঘেঁষা চেন্নাইয়ে এখন পুরোপুরি সামার। প্রচ- গরম। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে ওঠানামা করে। গতকাল চেন্নাইয়ে আর্দ্রতা ছিল বেশি। গরমও ছিল। অবশ্য সকালের আকাশে মেঘ ছিল। সেজন্য দিনের শুরুতে চিদাম্বরমের লাল মাটির উইকেটে পেসাররা বাড়তি সহায়তা পেয়েছেন।
কিন্তু দিনের শেষ সেশনে ব্যাটাররা পুরোপুরি সুবিধা আদায় করে নিয়েছেন উইকেট থেকে। চেন্নাই টেস্টের প্রথম দিনের প্রথম ও দ্বিতীয় সেশনে চালকের আসনে ছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা। সময়ের স্রোতে তৃতীয় সেশন নিজেদের করে নিয়েছে ভারত। দিনের প্রথম ও দ্বিতীয় সেশনের নায়ক ছিলেন টাইগার পেসার হাসান মাহমুদ, নাহিদ রানা ও অফ স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। তৃতীয় সেশনের নায়ক ছিলেন স্বাগতিক দুই স্পিন অলরাউন্ডার রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজা। চিদাম্বরমে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৪৪ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে রোহিত বাহিনী যখন পুরোপুরি খাদের কিনারায়, তখন সপ্তম উইকেট জুটিতে রেকর্ড ১৯৫ রানের জুটি গড়ে দলকে ম্যাচে ফেরান অশ্বিন ও জাদেজা। অশ্বিনের সেঞ্চুরিতে ম্লান হয়ে যায় হাসানের ৪ উইকেট। অশ্বিনের অপরাজিত ১০২ ও জাদেজার অপরাজিত ৮৬ রানে ভর করে ৮০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩৩৯ রান করেছে ভারত। দুই অলরাউন্ডারের রেকর্ড জুটিতে টেস্টের প্রথম দিন ম্যাচ থেকে পিছিয়ে পড়েছে নাজমুল বাহিনী। ১৯৩৪ সালে চিদাম্বরম স্টেডিয়ামের অভিষেক। প্রথম টেস্টে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত ও ইংল্যান্ড। এরপর ৯০ বছরে এ মাঠে ৩৫টি টেস্ট হয়েছে। বাংলাদেশ এই প্রথম খেলছে। ৯ দশকের ইতিহাসে নাজমুল হোসেন শান্ত দ্বিতীয় অধিনায়ক হিসেবে টস জিতে প্রতিপক্ষকে ব্যাটিংয়ে পাঠান। এর আগে ১৯৮২ সালে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক কিথ ফ্লেচার টস জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিলেন। যদিও টেস্টটি ড্র হয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, আগের ৩৪ টেস্টে টস জয়ী দল জিতেছে ১২ বার। লাল মাটির উইকেটে তিনজন পেসার ও দুই স্পেশালিস্ট স্পিনার নিয়ে একাদশ সাজান টাইগার অধিনায়ক নাজমুল। বিধ্বংসী বোলিংয়ে হাসান প্রথম ঘণ্টায় ৩ উইকেট তুলে কোণঠাসা করে ফেলেন রোহিত বাহিনীকে। হাসান একে একে আউট করেন রোহিত, শুভমান গিল ও বিরাট কোহলিকে।
এরপর চতুর্থ জুটিতে ইয়াশভি জয়সোয়াল ও ঋশাভ পান্থ ৬২ রান যোগ করে দলকে টেনে তুলতে চেষ্টা করেন। এর মধ্যে ৩ উইকেটে ৮৮ রান তুলে লাঞ্চ বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা।
দ্বিতীয় সেশনে আরও ৩ উইকেট তুলে নেন হাসান, নাহিদ ও মিরাজ। ১৪৪ রানে ৬ উইকেট তুলে টাইগাররা বসে পড়ে চালকের আসনে। সেখান থেকে অশ্বিন ও জাদেজা অসীম বীরত্বের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন থেকে যোগ করেন ১৯৫ রান। বাংলাদেশের বিপক্ষে সপ্তম উইকেট জুটিতে যা নতুন রেকর্ড। আগের রেকর্ড ছিল শচীন টেন্ডুলকার ও জহির খানের। ২০০৪ সালে ঢাকায় ১২৪ রান করেছিলেন দুজনে। অশ্বিন ১০২ রানের অপরাজিত ইনিংসটি খেলেন ১১২ বলে ১০ চার ও ২ ছক্কায়। জাদেজা ৮৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন ১১৭ বলে ১০ চার ও ২ ছক্কায়। চেন্নাইয়ের লোকাল হিরো অশ্বিনের সেঞ্চুরিটি ১০১ টেস্ট ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ এবং বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম। গতকাল টেস্টের প্রথম দিন ১০ ওভার কম খেলা হয়েছে। দুর্দান্ত বল করা হাসানের স্পেল ১৮-৪-৫৮-৪।