সড়ক দুর্ঘটনায় টাঙ্গাইলে চারজন এবং জামালপুরে তিনজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া আরও কয়েকটি দুর্ঘটনা মিলিয়ে আহতের সংখ্যা হয়েছে ৩৬ জন। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের কালিহাতী উপজেলার শোলাকুড়া নামক স্থানে বৃহস্পতিবার দিনগত গভীর রাতে বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে চারজন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। আহতদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। নিহত দুজন হলেন টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ী উপজেলার ঘাগড়া গ্রামের বাহার উদ্দিনের ছেলে মিজানুর রহমান (৩৩) ও জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলার মহিষবায়ান গ্রামের মৃত আবদুল ওয়াজেদের ছেলে জিয়াউল (৩৫)। অন্য দুজনের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ মোহাম্মদ নান্নু খান স্থানীয়দের বরাতে জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা টাঙ্গাইল হয়ে ময়মনসিংহগামী ক্রাউন ডিলাক্সের একটি বাস টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কে কালিহাতী উপজেলার বাংড়া ইউনিয়নের শোলাকুড়া নামক স্থানে পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা দ্রুতগামী একটি মালবাহী ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় বাসটি পাশের খাদে পড়ে যায়। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সূত্রের তথ্যে পাওয়া আহতরা হলেন- ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের মোবারকের ছেলে মন্নু মিয়া (২০), একই গ্রামের শেখ কলিম উদ্দিনের ছেলে রোহান উদ্দিন (১৮), জামালপুর সদর উপজেলার কান্দাইল গ্রামের আবেদ আলীর ছেলে আসাদ (৩৬), একই জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার বাউমি গ্রামের মো. সোমর আলীর ছেলে রফিক (৩৫), একই উপজেলার কুচুলিয়া গ্রামের ফজলের ছেলে মো. সাগর (২৫), একই গ্রামের ওয়াজউদ্দিনের ছেলে সোলায়মান (৪০), মাদারগঞ্জ উপজেলার বেড়ামাটি গ্রামের মৃত আবদুস সালামের ছেলে মশিউর (৩৫), একই জেলার মাদারগঞ্জ সদর উপজেলার মজিবরের ছেলে নুরনবী (২৫), সরিষাবাড়ী উপজেলার বাঁশবাড়ী গ্রামের সাগরের স্ত্রী রাজিয়া (৩০), বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার ছোনপচা গ্রামের খায়রুলের ছেলে মাজেদ (৩০), টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ফয়েজপুর গ্রামের মৃত তুফান শেখের ছেলে ময়নাল শেখ (৬০), একই উপজেলার বিহালী গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে জসিম উদ্দিন (৪০), একই জেলার ধনবাড়ী উপজেলা সদরের ধনবাড়ী গ্রামের মৃত জুলহাস উদ্দিনের ছেলে সেলিম (৪০), ঘাটাইল উপজেলার নলনা গ্রামের আবদুল বারেকের ছেলে খোকন (৩৫)। এ ছাড়া খলিলের ছেলে নাজির (২৮), রাজ্জাক (৩০), দুর্ঘটনাকবলিত ক্রাউন ডিলাক্স গাড়ির চালকও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। অন্য চারজন বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ায় তাদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। এদিকে ওই দুর্ঘটনার কারণে বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়কের এলেঙ্গা থেকে সল্লা পর্যন্ত প্রায় ২২ কিলোমিটার এলাকায় থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হয়। গতকাল ভোর থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার রাবনা বাইপাস এলাকা পর্যন্ত এ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন যানবাহনের চালক ও সাধারণ যাত্রীরা। জামালপুর : জামালপুর শহরের টিউবওয়েলপাড় ত্রিমোড়ে ট্রাকচাপায় অটোরিকশার তিন যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও দুজন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে জামালপুর-টাঙ্গাইল সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- মেলান্দহ উপজেলার কাপাশাহাটিয়া এলাকায় জয়দর হোসেনের ছেলে রুকন মাহমুদ (৪৫), শেখ সাদি গ্রামের আবদুল মালেক (৫৩) ও বেলটিয়া কামিল মাদরাসার শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান (৪৫)। স্থানীয়রা জানান, সকালে যাত্রী নিয়ে কালিবাড়ী থেকে শহরের দিকে যাচ্ছিল একটি অটোরিকশা। পথে টিউবওয়েলপাড় ত্রিমোড়ে পেছন থেকে একটি ট্রাক অটোরিকশাটিকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন অটোরিকশার চালক রুকন। এ সময় গুরুতর আহত হন অটোরিকশার দুই যাত্রী। এ অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন। জামালপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফয়সাল মো. আতিক বলেন, ট্রাকটি জব্দ করা যায়নি। অটোরিকশাটি থানায় আনা হয়েছে। বরিশাল : বরিশালের গৌরনদীতে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১২ জন আহত হয়েছেন। গতকাল দুপুরে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের বার্থী এলাকায় এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। গৌরনদী ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মো. বিপুল হোসেন জানান, মহাসড়কের বার্থী এলাকায় বলাকা ও ইউনিক পরিবহনের দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে দুই বাসের ১২ জন যাত্রী আহত হন। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা গুরুতর আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। গৌরনদী হাইওয়ে থানার এসআই কামরুজ্জামান জানান, দুর্ঘটনাকবলিত বাস দুটি আটক করা হয়েছে। বিশ্বনাথ (সিলেট) : সিলেটের বিশ্বনাথে যাত্রীবাহী বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অটোচালকসহ গুরুতর আহত হয়েছেন চারজন। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্বনাথ-জগন্নাথপুর সড়কের দতা বড়বাড়ীর সামনে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন- উপজেলার দশঘর ইউনিয়নের বাইশঘর গ্রামের মৃত ইসবর আলীর ছেলে, অটোচালক ইজাজুর রহমান (৩৮), কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানার বড় পিপরিয়া গ্রামের হান্নান মিয়ার ছেলে সুহেল মিয়া (৩৭), তার স্ত্রী লেখা বেগম (৩০) ও ছেলে ইয়াসিন মিয়া (১৩)। স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যা ৭টার দিকে জগন্নাথপুর থেকে সিলেটগামী যাত্রীবাহী বাস (ঢাকা মেট্রো-জ-১১-২৬১১) ও রশিদপুর থেকে যাত্রী নিয়ে মিয়ারবাজারগামী সিএনজিচালিত অটোরিকশার মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। দুমড়েমুচড়ে যায় অটোরিকশা। আহত সবাই সিএনজি যাত্রী। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে দ্রুত সিলেট ওসমানী মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার পরে গাঢাকা দেন ঘাতক বাসচালক। এ সময় ওই সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে বিশ্বনাথ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুর্ঘটনাকবলিত বাস ও সিএনজি আটক করে নিয়ে যায়।