আর্জেন্টিনার ঐতিহ্যবাহী ট্যাঙ্গো নাচে অংশ নেওয়া পর্যটকদের জন্য একদিকে যেমন উত্তেজনাপূর্ণ অভিজ্ঞতা, অন্যদিকে তেমনি হতে পারে আতঙ্কজনক। কারণ, এই নাচের মুদ্রা আয়ত্ত করা বেশ কঠিন। কাঠের মেঝেতে উঁচু জুতো পায়ে দিয়ে জুটি বেঁধে পরিবেশিত হয় ট্যাঙ্গো নাচ। একেবারে নতুনরা নাচের জন্য মঞ্চে উঠলে বড় ধরনের চাপে পড়তে পারেন।
আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস এইরেসে ট্যাঙ্গো নাচের আসর জমে। সেখানে পেশাদার নৃত্যশিল্পীরা নতুনদের সহায়তার জন্য থাকেন। এদের বলা হয় ‘ট্যাক্সি ড্যান্সার’। এ ধরনের একজন পেশাদার, ডেভিড টোলোসা জানান, স্থানীয় একজনের সাহায্য ছাড়া ট্যাঙ্গো নাচে অংশগ্রহণ অনেকটাই দুঃস্বপ্নের মতো হতে পারে। কারণ, নাচের মঞ্চটি এক ধরনের প্রদর্শনী যেখানে প্রতিটি পদক্ষেপ পর্যবেক্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে।
নতুন নৃত্যশিল্পীদের ভুলত্রুটির জন্য অন্যান্য অভিজ্ঞরা বিরক্তি প্রকাশ করতে পারেন এবং এমনকি বাজে ব্যবহার করতেও দ্বিধা করেন না।
বিশেষ করে আর্জেন্টিনায় একাকী নারী পর্যটকদের জন্য ট্যাঙ্গো নাচের অভিজ্ঞতা হতাশাজনক হতে পারে। সাধারণত পুরুষরা নাচের জন্য নারীদের আমন্ত্রণ জানায়। অপরিচিত বা সঙ্গীহীন নারীদের জন্য এই আমন্ত্রণ পাওয়া খুবই কঠিন। এ কারণেই অনেক নারী ট্যাক্সি ড্যান্সারদের ভাড়া করে থাকেন, যাতে তারা নাচের সঙ্গী নিশ্চিত করতে পারেন এবং ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে না হয়।
টোলোসার বেশিরভাগ গ্রাহকই বিদেশি, এবং এদের মধ্যে চীনা ও জাপানি নারীদের সংখ্যা বেশি। প্রতি ঘণ্টার জন্য তিনি ৫০ ডলার চার্জ করেন।
আগস্ট মাসে বুয়েনস এইরেসে বার্ষিক ট্যাঙ্গো উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। তখন টোলোসার কাজের চাপ অনেক বেড়ে যায়। সারা বছরজুড়েই এখানে ট্যাঙ্গো নাচের বিভিন্ন অনুষ্ঠান, যা মিলোঙ্গা নামে পরিচিত, আয়োজিত হয়। টোলোসার মতো ট্যাক্সি ড্যান্সাররা স্বাধীনভাবে কাজ করলেও, বুয়েনস এইরেসে কিছু ট্যাঙ্গো সংস্থা রয়েছে, যা গ্রাহকদের নাচ শেখানো এবং নাচের সময় সঙ্গ দেওয়ার কাজ করে থাকে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল