দক্ষিণ কোরিয়ার চে-সুন হুয়া ৮১ বছর বয়সেও জীবনের নতুন স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে গেছেন। বিশের কোঠায় তার ইচ্ছা ছিল ফ্যাশন মডেল হওয়ার, কিন্তু সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিতে সময় লেগে যায় পাঁচ দশক। এখন, অশীতিপর বয়সে এসে তিনি 'মিস ইউনিভার্স কোরিয়া' প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে নজির স্থাপন করেছেন। সুন্দরী প্রতিযোগিতার বয়সসীমা ১৮ থেকে ২৮ হলেও এবার তা বাতিল হওয়ায় সুযোগ পেয়েছেন চে-সুন হুয়া।
চে-সুন হুয়া বলেন, ‘বয়সসীমা ওঠানো হয়েছে শুনে ভাবলাম, এটাই সুযোগ। এ সুযোগ হাতছাড়া করা যাবে না।’ যদিও তিনি বিজয়ী হতে পারেননি, তবে চূড়ান্ত পর্ব পর্যন্ত পৌঁছে গিয়ে জিতে নিয়েছেন ‘বেস্ট ড্রেসড অ্যাওয়ার্ড’। কম বয়সী প্রতিযোগীদের সঙ্গে লড়াই করে নিজের দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাসের প্রমাণ দিয়েছেন তিনি।
তরুণ বয়সে চে-সুন হুয়া ফ্যাশন মডেল হওয়ার স্বপ্ন দেখলেও জীবনের বাস্তবতায় তাকে চাকরি করতে হয়। সন্তানের দেখাশোনা ও আর্থিক সচ্ছলতার কারণে তিনি হাসপাতালের পরিচর্যা কর্মী হিসেবে কাজ নেন। একদিন এক রোগী তাকে পরামর্শ দেন যে ৭২ বছর বয়সে তিনি মডেল হিসেবে আবেদন করতে পারবেন। সেই পরামর্শ তার জীবন বদলে দেয়।
চে-সুন হুয়া চাকরির পাশাপাশি একটি মডেলিং একাডেমিতে ভর্তি হন। কর্মঘণ্টা শেষে রাতে, যখন হাসপাতালের পরিবেশ শান্ত হয়ে আসত, তখন তিনি ক্যাটওয়াক প্র্যাকটিস করতেন ও আয়নার সামনে পোজ দিতেন। মডেলিংয়ের এই অধ্যায় তার জন্য ছিল নতুন স্বপ্নের শুরু।
চে-সুন হুয়া এরপর একাধিক ফ্যাশন শোতে অংশ নেন এবং ম্যাগাজিনে তার ছবি ছাপা হতে থাকে। টেলিভিশন অনুষ্ঠানে তার গল্প সম্প্রচারিত হয়, যা মানুষের মধ্যে অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘জীবনের দ্বিতীয়ার্ধে এসে আমি জিতে গেছি। প্রথম ভাগে কোনো বড় অর্জন না থাকলেও অবশেষে সাফল্য ধরা দিয়েছে।’
মিস ইউনিভার্স কোরিয়ার আরেক প্রতিযোগী ৫৯ বছর বয়সী উন মি-ইয়ুং চে-সুন হুয়াকে দেখে মডেলিংয়ে অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তিনি বলেন, যখন তাকে প্রথম টিভিতে দেখি, তখন মনে হলো, আমিও তার মতো জ্যেষ্ঠ মডেল হতে পারব।’ চে-সুন হুয়া তার আত্মবিশ্বাস ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে দেখিয়েছেন, স্বপ্ন পূরণের জন্য বয়স কোনো বাধা নয়।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল