পুরো বিলেই ফুটেছে পদ্মফুল। দেখে চোখ ফেরানো দায়। পদ্মফুলের হাতছানিতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন পর্যটকরা। বিলটির নাম সিংরইল বিল হলেও পদ্মফুলের কারণে মানুষ এটিকে পদ্মবিল নামেই ডাকেন এবং এ নামেই পরিচিতি লাভ করেছে।
প্রায় ১২ একর জায়গা জুড়ে বিলটিতে আদিকাল থেকেই প্রকৃতিগতভাবে পদ্মফুল ফুটে থাকে। বিলে ফোটা পদ্মফুল বাতাসে পাপড়ি মেলে নিজেকে তুলে ধরছে সৌন্দর্য পিপাসুদের কাছে। নারী পর্যটকদের অনেকেই সেই ফুল তুলে মাথায় গুঁজে দিচ্ছেন। কেউবা প্রেম নিবেদন করছেন সেই ফুলের কুঁড়ি দিয়ে। অনেককাল ধরে স্থানীয়দের কাছে এটি একটি সাধারণ দৃশ্য মনে হলেও কালক্রমে সৌন্দর্যপূজারিদের কাছে হয়ে ওঠে আকর্ষণীয় স্থান। এর আকর্ষণে তারা ছুটে যাচ্ছেন দলে দলে। বর্ষা মৌসুম এলেই তারা ভিড় করেন এই পদ্মবিলে। পুরো বর্ষা জুড়েই থাকে পর্যটকদের আনাগোনা। স্থানীয় বাসিন্দারা পর্যটক আকর্ষণের উদ্যোগ নিয়েছেন। তারা পর্যটকদের ছোট ছোট নৌকায় করে বিল ঘুরিয়ে দেখান। এতে কিছু মানুষের আয় রোজগারেরও ব্যবস্থা হয়েছে।
নৌকার মাঝি মানিক মিয়া জানান, এই মৌসুমে পদ্মফুল দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এখানে আসেন। পর্যটকদের নৌকায় করে বিল ঘুরিয়ে দেখান তিনি। এতে তার বাড়তি কিছু আয় হয়। মানিকের মতো আরও বেশ কিছু তরুণ বাড়তি রোজগার করছেন বিলে নৌকা বেয়ে। মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের যুবক শুভ ভুঁইয়া সিফাত এবারই প্রথম পদ্মবিলে গিয়েছেন। তিনি জানান, কিছুদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ বিলটি সম্পর্কে পরিচিত হন তিনি। মনে মনে স্থির করেন বিলটিতে যাওয়ার। ৬ সেপ্টেম্বর তার পরিচিত একজনকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে যান বিল দেখতে। পদ্মফুলের অপার সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ তারা দুজনই।
সিফাতের সঙ্গে যাওয়া রাকিবুল হাসান রোকেল জানান, মূল রাস্তা থেকে বিলটিতে যাওয়ার প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা কাঁচা এবং খুবই ভাঙাচোরা। ফলে পর্যটকদের যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাতে হয়। গাড়ি নিয়ে গেলেও দূরে রেখে যেতে হয়। তিনি রাস্তাটি পাকা করার দাবি জানান।
কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার শেষ সীমানা ঘেঁষা করিমগঞ্জ উপজেলার গুজাদিয়া এলাকায় সিংরইল বিলের অবস্থান। গুজাদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ মাসুদ জানান, পুরো এলাকাটিকে নতুন করে পরিচিত করেছে সিংরইল বিলটি। বিলটিকে পদ্মবিল নামেই মানুষ চিনে। তিনি আরও জানান, বিলে যাওয়ার জন্য আগে কোনো রাস্তা ছিল না। তার উদ্যোগে কাঁচা রাস্তাটি হয়েছে। রাস্তাটি পাকা করা হলে এটি আরও আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হবে বলে মনে করেন তিনি।