সবার কাছে প্লাস্টিক। কেউ হাতে, কেউ মাথায়, কেউ কাঁধে করে বস্তায় ভরে নিয়ে আসছেন প্লাস্টিকের নানা পণ্য। এসব দিয়ে কেউ নিচ্ছেন চাল, ডাল, তেল, সবজি, কেউবা সংসারের নিত্যপণ্য। এভাবে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর প্লাস্টিকের বিনিময়ে নিত্যপণ্য দেওয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন পরিবেশ রক্ষার দীর্ঘমেয়াদি একটি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। একই সঙ্গে সারা দেশে চালু করা হবে ‘প্লাস্টিক বিনিময় স্টোর’। ইতোমধ্যে চালু হয়েছে সেন্টমার্টিন দ্বীপে। কর্মসূচিতে সহযোগিতা করছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক।
জানা যায়, বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সারা দেশে প্লাস্টিকের বিনিময়ে নিত্যপণ্য আদানপ্রদান করা হচ্ছে। দেশে ৬৫টি কর্মসূচিতে প্লাস্টিক বিক্রি করে জীবিকানির্বাহ করে এমন ১৭ হাজার পরিবারকে কার্ডের মাধ্যমে প্লাস্টিকের বিনিময়ে ২২ প্রকারের পাঁচ মেট্রিক টন নিত্যপণ্য দেওয়া হচ্ছে। গত ২১ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম নগরের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সংলগ্ন মকবুল প্রাইমারি স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে ৩ শতাধিক ব্যক্তিকে দেওয়া হয়েছে প্লাস্টিকের বিনিময়ে নিত্যপণ্য। ১ কেজি প্লাস্টিক দিয়ে অন্তত ৮০ থেকে ৯০ টাকার পণ্য দেওয়া হচ্ছে। প্রতি কর্মসূচিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০ থেকে ৭০ জন স্বেচ্ছাসেবক অবৈতনিক দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশ পেট্রো-ক্যামিকেল কোম্পানি লিমিটেড সংগ্রহ করা প্লাস্টিক ক্রয় করে।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের বোর্ড মেম্বার জামাল উদ্দিন বলেন, প্রান্তিক মানুষ কুড়ানো বা জমানো প্লাস্টিক জমা দিলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী সংগ্রহ করতে পারছেন। এর মাধ্যমে তারা সংগৃহীত প্লাস্টিক দিয়ে সংসারের নিত্যপণ্য নিতে পারছেন।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্লাস্টিক দূষণ কমানোর জন্য ‘প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ স্টোর’ নামে একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। যেখানে মানুষ তাদের ব্যবহৃত প্লাস্টিকপণ্যের খালি পাত্র, বোতল বা পলিথিন এক্সচেঞ্জ করে নিতে পারেন চাল, ডাল, তেল, চিনি ও লবণসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি। সেন্টমার্টিন দ্বীপে এ কর্মসূচির অভূতপূর্ব সফলতার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের ৬৪টি জেলায় প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ স্টোর স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করে সংস্থাটি।
প্লাস্টিকের মাধ্যমে দূষণ একটি ব্যাপক পরিবেশগত সমস্যা। বাংলাদেশে এ চ্যালেঞ্জটি বর্তমানে উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। এটি এখন শহর, গ্রামসহ তৃণমূল পর্যায়- সব ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।