শিরোনাম
২৩ মে, ২০২২ ১৩:১১

তেলের চাহিদা মেটাতে কুমিল্লায় বাড়ছে তিল-সরিষা চাষ

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

তেলের চাহিদা মেটাতে কুমিল্লায় বাড়ছে তিল-সরিষা চাষ

পাহাড়পুর। কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী একটি গ্রাম। গ্রামের মাঠে আগে দুইটি মৌসুমে ধান চাষ হতো। বাকি সময় জমি খালি পড়ে থাকেতো। সেখানে তেলের চাহিদা মেটাতে আরো দুইটি তেল ফসল সরিষা ও তিল চাষ করা হচ্ছে। ধারাবাহিক চার ফসল হচ্ছে সরিষা, তিল, রোপা আউশ ও রোপা আমন। 

কৃষি অফিসের সূত্রমতে, ওই মাঠের ৬০ বিঘা জমিতে বারি সরিষা ১৪ চাষ করা হয়। সরিষা ফসল তোলার পর ২০ বিঘা জমিতে বিনাতিল-২, বারি তিল-৪, হোমনার স্থানীয় তিল চাষ করা হয়েছে। এক জমিতে বছরে চার ফসল করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ বানিন রায় এই ফসল বিন্যাস সম্প্রসারেণ কাজ করছেন।

সূত্রমতে, এই মাঠে তিল বিঘাপ্রতি ৪-৫ মণ উৎপাদন হয়। যার বাজার মূল্য ১৬-১৮ হাজার টাকা। গড়ে খরচ হয় বিঘা প্রতি ৪ হাজার টাকা। বিঘা প্রতি লাভ ১২-১৪ হাজার টাকা। সরিষা বিঘাপ্রতি ৪-৫ মণ উৎপাদন হয়, যার বাজার মূল্য ১৬-২০ হাজার টাকা। গড়ে খরচ হয় বিঘা প্রতি ৪ হাজার টাকা। বিঘা প্রতি লাভ ১২-১৬ হাজার। আউশ ধান বিঘা প্রতি ১৪ মণ করে ফলন হলে আয়-১৫ হাজার টাকা, ব্যয়- ১১ হাজার টাকা ধরলে লাভ হতে পারে ৪ হাজার টাকা। 

স্থানীয় কৃষক ওমর ফারুক, আবদুল হান্নান, আবদুল হালিম জানান, রবি মৌসুমে সরিষা চাষের পর পাহাড়পুর গ্রামের মাঠের জমিগুলো পতিত থাকতো। উপজেলা কৃষি অফিস কৃষকদের তিল চাষের পরামর্শ দেয় ও বীজ বিতরণ করে। শুরুতে তিল চাষের অভিজ্ঞতা না থাকায় অনেকেই শঙ্কা প্রকাশ করেন। তবে সকল শঙ্কা কাটিয়ে ২০ বিঘা জমিতে তিল চাষ সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে জমির পরিস্থিতি দেখে বিঘা প্রতি ১২-১৪ হাজার টাকা লাভের আশা করছেন কৃষকরা।  

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ বানিন রায় জানান, বোরো-রোপা আমন শস্য বিন্যাসের স্থলে সরিষা-তিল-রোপা আউশ- রোপা আমন শস্য বিন্যাসে বিঘা প্রতি অতিরিক্ত আয় সম্ভব গড়ে ২৫ হাজার টাকা। পাহাড়পুরের মোট ৮০ বিঘা জমিতে প্রতি বছর অতিরিক্ত ২০ লক্ষ টাকা অর্থনীতিতে যুক্ত হবে। দেশের তেল চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি সীমান্ত এলাকার মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোছা. আফরিণা আক্তারের পরামর্শ নিয়ে আমরা কাজ করছি। উপসহকারী কৃষি অফিসার মো. সাহেদ হোসেন সেটি বাস্তবায়ন করছেন। স্থানীয় কৃষকরা আন্তরিক হওয়ায় তারা সফলতা পাচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোছা. আফরিণা আক্তার জানান, পাহাড়পুর মাঠের নতুন শস্য বিন্যাস তেলের সংকট দূরে সহায়তা করবে। ইতিমধ্যে বারি সরিষা ১৪ ও বিনাতিল-০২ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আউশ ও আমনের নতুন জাত বিস্তারের পরিকল্পনা রয়েছে। কৃষকরা এই শস্য বিন্যাস ধরে রাখলে তাদের ও দেশের আর্থ সামাজিক অবস্থা আরো মজবুত হবে।  

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

সর্বশেষ খবর