রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করছে পুকুর ও হ্যাচারির রেনু। পুকুর, ক্রিক ও ডেবাতে ১২ মাস মাছ চাষ করা হয়। সে মাছ থেকে ডিম সংগ্রহ করে হ্যাচারিতে রূপান্তরিত করা হচ্ছে পোনা মাছে। তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ থাকে, সে সময় সে পোনা ছাড়া হয় রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদে। মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং প্রাকৃতিক প্রজনন স্বাভাবিক রাখতে এমন প্রদ্ধতি চালু রেখেছে রাঙামাটি মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি)। এ সময় কাপ্তাই হ্রদে ছাড়া হবে প্রায় ৬০ মেট্রিক টন পোনা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তর ও কৃত্রিম হ্রদ কাপ্তাই। এ হ্রদে পাওয়া যায় প্রায় ৭৪টি প্রজাতির দেশীয় মাছ এবং ৬টি প্রজাতির বহিরাগত মাছ পাওয়া যায়। এ হ্রদের উপর নির্ভরশীল প্রায় ২৬ হাজার মৎস্যজীবী পরিবার। বছরের ৯মাস এ হ্রদ থেকে আহরণ করা হয় হাজার হাজার টন মাছ। তাই কাপ্তাই হ্রদে মাছের সুষ্ঠু ও প্রাকৃতিক প্রজনন স্বাভাবিক ও বংশ বিস্তারের লক্ষ্যে কাজ করছে রাঙামাটি মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন বিএফডিসি। হ্রদে পোনা মাছ যোগান দিতে পুকুর, ডোবা, ক্রিক ও হ্যাচারিতে করা হচ্ছে মাছ চাষ।
বিএফডিসি সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটি বিএফডিসির পরিচালিত মারিশ্যাচরের এ হ্যাচারিতে প্রতি বছর উৎপাদন করা হয় প্রায় ৭০কেজি রেনু। মাত্র এক কেজি রেনু থেকে প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার পর্যন্ত পোনা মাছ উৎপাদন করা সম্ভব হয়। মাছের বংশবিস্তার করতে হ্যাচারির অধীনে ১১টি নার্সারি পুকুর, ৯টি ডেবা ও একটি ক্রিকে পোনামাছ উৎপাদন করা হয়। যা বছরের তিন মাস কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য উৎপাদনের জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করে। হ্যাচারিতে রেনু উৎপাদন স্বাভাবিক থাকলেও পুকুর স্বল্পতার কারণে পোনা মাছ উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাই পুকুরের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে কাজ করছে বিএফডিসি বলছেন রাঙামাটি মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. ফয়েজ আল করিম। তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি কাপ্তাই হ্রদে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে। তার জন্য যা যা করার প্রয়োজন তাই করছি। আমাদের মারিশ্যারচরে হ্যাচারিতে রেনু থেকে উৎপাদন করা হচ্ছে পোনা মাছ। সে পোনা মাছ কাপ্তাই হ্রদে বন্ধকালীন সময় ছাড়া হয়। পোনা মাছ উৎপাদন আরও বেশি বৃদ্ধি করা যেতো যদি পর্যাপ্ত পুকুর থাকতো। মাছ চাষের জন্য পুকুরের সংকট রয়েছে। পুকুরের সংখ্যা বৃদ্ধি করা গেছে মাছে রেনু ও পোনা উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব হতো।
উল্লেখ্য, রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে মাছের সুষ্ঠু বংশ বিস্তার ও প্রজনন বৃদ্ধি লক্ষ্যে বর্তমানে হ্রদে সবধরণের মাছ আহরণ বন্ধ রয়েছে। প্রতি বছর মে মাস থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত । অর্থাৎ টানা তিন মাস পর্যন্ত রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণ বন্ধ রাখা হয়।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল