তীব্র দাবদাহ। প্রখর রোদে পুড়ছে প্রকৃতি। এ বছর আগের তুলনায় দেখা মিলেনি ঝড়-বৃষ্টির। চৈত্র পড়তেই খাল-বিল-পুকুর শুকিয়ে তলানিতে জমায় পানি। বৈশাখ শেষ হতে চললেও, দেখা নেই পানির প্রাকৃতিক উৎস্যের। এ করণে ক্রমেই নিচে নেমে যাচ্ছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর।
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার বাসা-বাড়িতে বসানো ৬নং গভীর-অগভীর নলকূপে মিলছে না পানি। স্তর নেমে যাওয়ায়, অনেক জায়গায় পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে একাধিক পাম্প। বেশ কিছু এলাকায় পানি ঢেলে, পাম্প থেকে বহু কষ্টে পানি তুলছেন অনেকেই। পানিসংকটে ধুঁকছে গভীর নলকূপগুলোও। এতে সুপেয় পানির সংকট, প্রকট হওয়ার অশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এভাবে ভূগর্ভ পনিশূণ্য হতে থাকলে, ভূমিকম্পে বড় ধসের আশঙ্কা করছেন গবেষকরা।
জানা যায়, সিলেটে বিশ্বনাথ উপজেলায় রয়েছে দেড় হাজার স্যালো পাম্প ও ৬
হাজার ৫ শত গভীর সরকারি নলকূপ। এছাড়া ব্যক্তি পর্যায়ে আছে আরও ১২-১৩
হাজার গভীর-অগভীর নলকূপ। উপজেলা সদরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের
কাছে বসানো আছে ভূগর্ভস্থ তলদেশের পানির স্তর পরিমাপক ১ হাজার ফুট গভীর
নলকূপ। প্রতি বছর শুকনো মৌসুমে এ অঞ্চলে গড়ে দেড়-দুই ফুট করে পানির লেয়ার
নিচে নেমে যায়। তখন ভূগর্ভস্থ পানির সংকট দেখা দেয়। পানিশূণ্য হয়ে অকেজো
হয় একাধিক নলকূপ। হ্রাস পেতে থাকে সাধারণ টিউবওয়েলের পানির প্রবাহ।
পানি সঙ্কটে ভুক্তভোগী উপজেলার আমের গাঁও গ্রামের মো. জিয়াউর রহমান
জানান, তার ২শ ৫০ ফুট গভীরতা সম্পন্ন টিউবওয়েলটির পানির প্রবাহ বন্ধ
হয়েছে। মোটর সংযোগের মাধ্যমে আপাতত পানির অভাব পূরণ করছেন তিনি। গ্রামের
মসজিদের নলকূপেরও একই অবস্থা। আগে যেখানে মসজিদের দু’টি অজুর পানির
ট্যাংকি এক ঘণ্টায় ভরে যেতো সেখানে তিন ঘণ্টায়ও তা হচ্ছে না।
পুরানগাঁও গ্রামের শফিকুল ইসলাম জানান, তার অগভীর নলকূপটিও পানি দিচ্ছে না। পানি ঢেলে অনেকক্ষণ চাপ দেয়ার পর পানি আসে।
এ বিষয়ে উপজেরলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী সঞ্জিব চন্দ্র সরকার ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’কে বলেন, বিশুদ্ধ পানির সমস্যা এই মৌসুমেই হয়ে থাকে। যে পরিমাণ পানি তোলা হয়, সে পরিমাণ পানি প্রাকৃতিক ভাবে ফিল্টারিং হয়ে নিচে না নামলে এ সমস্যা দেখা দেয়। তাছাড়া অধিক মাত্রায় পলিথিনের ব্যবহারের কারণে পানি নিচে যেতে বাধাগ্রস্ত হয়। সরকারের পক্ষ থেকে গভীর নলকূপ ও স্যালো দেয়া হচ্ছে। তাছাড়া বৃষ্টিপাত শুরু হলে এ সমস্যা থাকবে না।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল