২০ নভেম্বর, ২০২২ ১০:৪৩

ওসমানী বিমানবন্দরে বাড়ছে নিরাপত্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

ওসমানী বিমানবন্দরে বাড়ছে নিরাপত্তা

সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ দেশের সব আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরের নিরাপত্তা আরও বাড়াতে আবার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় ও বেবিচকের কর্মকর্তারা কয়েক দফায় বৈঠকও করেছেন।

কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ও বলেছে, ‘বিমানবন্দরে নিরাপত্তার ঘাটতি আছে। ঘাটতি পূরণে আরও কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলতে হবে।’ এরপরই বেবিচক চিঠি পাঠায়। আগেও এ বিষয়ে একাধিক চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ আছে। নতুন চিঠিতে আগ্নেয়াস্ত্রসহ নিরাপত্তা-সরঞ্জাম বাড়ানোর অনুরোধ করা হয়েছে। বিমানবন্দরে পাখি, বাদুড়, বেজি ও শেয়ালের উৎপাত বেড়ে যাওয়ায় চিন্তায় পড়েছে কর্তৃপক্ষ। কোনো বিমানবন্দরেই পাখি মারার অস্ত্র নেই। এজন্য শতাধিক আগ্নেয়াস্ত্র কেনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, ‘সব বিমানবন্দরে কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সুপারিশ কার্যকর করা হচ্ছে। শাহজালালসহ সব বিমানবন্দরে নিরাপত্তার ফাঁক আছে; তা পূরণ করা হচ্ছে। নিরাপত্তার জন্য যা যা করা দরকার সবই করা হচ্ছে। আরও নিরাপত্তা-সরঞ্জাম আনা হচ্ছে। নিরাপত্তার জন্য কোনো ফাঁক রাখা হবে না।’     

বেবিচকের কর্মকর্তারা বলেন, ‘পাখি ও শেয়াল মারার অস্ত্রই (এয়ারগান) নেই কোনো বিমানবন্দরে। জনবল সংকটও আছে। এই নিয়ে আতঙ্কে থাকে সরকারি-বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলো। পাখির সার্বক্ষণিক আনাগোনা থাকে বিমানবন্দরে। মাঝেমধ্যে পাখির আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিমান। বিমানের উড্ডয়ন ও অবতরণের সময় পাখির আঘাতের ঘটনা একাধিকবার ঘটেছে। বিভিন্ন দেশে পাখির আঘাতে বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে। ৩৭ বছরের পুরনো এয়ারগান রয়েছে বটে, তবে সেসব সচল নেই। এজন্য আমরা উদ্যোগ নিয়েছি অস্ত্র কেনার। আগামী ৬ মাসে অন্তত অর্ধশত এয়ারগান কেনা হবে। এই জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ‘বর্তমানে দেশি-বিদেশি প্রায় ৪০টি বিমান সংস্থা বাংলাদেশে তাদের ফ্লাইট পরিচালনা করছে। ৪৭টি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বিমান চলাচল চুক্তি রয়েছে। বাংলাদেশ বিমানের পাশাপাশি বেসরকারি কয়েকটি এয়ারওয়েজ যাত্রীবাহী বিমান এবং ১০-১২টি বিমান সংস্থা কার্গো বিমান ও হেলিকপ্টার পরিচালনা করছে। প্রতিদিন ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার যাত্রী আসা-যাওয়া করেন। বিমানবন্দরে নিরাপত্তার ঘাটতি রয়েছে।’

তারা বলেন, ‘যাত্রী আসা-যাওয়ার সময় যেনতেনভাবে তল্লাশি করা হয়। রানওয়েতেও তেমন নিরাপত্তা নেই। খোদ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ও নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে না।’

এসব অভিযোগ ওঠার পর নড়েচড়ে বসে বেবিচক। দেশের সব বিমানবন্দরের নিরাপত্তার বিষয়ে বেবিচক চেয়ারম্যান এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কয়েক দফা বৈঠক করেন। নিরাপত্তা-সরঞ্জামের জন্য বেবিচক একটি চিঠি পাঠায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে। চিঠিতে আরও কিছু সমস্যার বিষয়েও বলা হয়। ইডিএস, ডুয়েল ভিউ এক্সরে স্ক্যানিং মেশিন, ডুয়েল ভিউ এক্সরে স্ক্যানিং মেশিন ফর কেবিন উইথ ট্র্রে রিটার্ন সিস্টেম, আন্ডার ভেহিকল স্ক্যানিং মেশিন, এক্সপ্লোসিভ ট্রেস ডিটেক্টর (ইটিডি), লিকুইড এক্সপ্লোসিভ ডিটেকশন সিস্টেম, ডাবল ক্যাব পিকআপ, ইটিভি কনজুম্যাবলস ফর এক্সপ্লোসিভ ট্রান্স ডিটেক্টর মেশিনের কথা বলা হয় চিঠিতে। আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরের রানওয়ের নিরাপত্তা বাড়াতেও বলা হয়। পুলিশের পাশাপাশি আনসারের সংখ্যাও বাড়াতে বলা হয়েছে।

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর