উপমহাদেশের প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে ইঞ্জিনচালিত নৌকা চালিয়ে একটি ‘মা মাছ’ নিধনের দায়ে আব্দুল আজিজ নামে একজনকে ১০ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে আব্দুল আজিজকে কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
আব্দুল আজিজের বাড়ি চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা গ্রামে। তার বাবার নাম আব্দুল মান্নান।
এর আগে দুপুরে হাটহাজারী উপজেলার খলিফার ঘোনা এলাকায় মৃগেল প্রজাতির একটি মৃত মা মাছ ভেসে আসে। স্থানীয়রা মাছটি উদ্ধার করে নদীর তীরে তুলে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ রুহুল আমীন এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) হালদা নদী রিচার্স ল্যাবরোটরির সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়াকে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে মাছটি উদ্ধার করেন।
ইউএনও মুহাম্মদ রুহুল আমীন বলেন, ‘এখন প্রজননের ভরা মৌসুম। মা মাছ দ্রুতই ডিম ছাড়বে। নদীতে মা মাছের বিচরণ বেড়েছে। তাদের নিরাপত্তায় আমরা নদীতে সব ধরনের ড্রেজার ও ইঞ্জিনচালিত নৌকা চলাচল নিষিদ্ধ করেছি। কিন্তু এরই মধ্যে রাতের আঁধারে একটি ইঞ্জিন নৌকা নদীতে ঢুকে পড়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, গত দুই দিনের মধ্যে নৌকাটি ঢুকে পড়েছিল। সেই নৌকার প্রপেলারের আঘাতে মৃগেল মাছটির মৃত্যুর হয়। ইতোমধ্যে নৌকাটি জব্দ করা হয়েছে। নৌকাটির মাঝি আব্দুল আজিজকে ১০ দিনের সাজা দেওয়া হয়েছে।’
অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, ‘ধারণা করছি, গত সোমবার রাতে মৃগেল মাছটি আঘাত পায়। এর ঘাড় একেবারে থেঁতলে গেছে। মাছটির ওজন প্রায় ৮ কেজি, লম্বা ৩৩ ইঞ্চি। এই মৌসুমে এই ধরনের মা মাছ সাধারণত ডিম ছাড়ার জন্য হালদায় আসে।’
প্রসঙ্গত, প্রায় ৮০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলা দিয়ে প্রবাহিত হালদা নদী সঙ্গে সংযুক্ত আছে ১৭টি খাল। কিন্তু দখল-দূষণ এবং অসাধু মা মাছ শিকারের কবলে পড়ছে নদীটি। মরছে ডলফিন, শিকার করা হচ্ছে মা মাছ, বিপন্ন হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল