চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে চসিক জোরালো পদক্ষেপ নিয়েছে। এই দুটি রোগ প্রতিরোধে নিয়মিত কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। শনিবার চমেক হাসপাতালে তিন মাসব্যাপী এক বিশেষ ‘ক্রাশ প্রোগ্রাম’ চালু করা হয়েছে। আমরা নতুন একটি উন্নতমানের ওষুধ এনেছি, যা যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো থেকে আমদানি করা। এটি পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহারে ইতিবাচক ফল পাওয়া গেছে।
রবিবার নগর ভবনের চসিক সম্মেলন কক্ষে চসিকের উদ্যোগে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে প্রস্তুতিমূলক সমন্বয় সভা শেষে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, কোভিডের এই ধরনটি পূর্বের ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের চাইতে বেশি শক্তিশালী। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামে ১০০ এর বেশি রোগী আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৬ জন মানুষ মৃত্যুবরণ করেছেন। এই ভাইরাসটি কতটা ভয়ংকর হতে পারে, তা বোঝার পরও আমরা অনেকেই উদাসীন। আমি নিজে পুরো শহর পরিদর্শন করে দেখেছি মানুষ এখনো যথাযথভাবে মাস্ক পরছে না, স্যানিটাইজার ব্যবহার করছে না, নিরাপদ দূরত্ব মানছে না। এ অবস্থায় ব্যাপক সচেতনতা জরুরি।
তিনি বলেন, নিয়মিত মাস্ক ব্যবহার, হাত ধোয়া, হাঁচি-কাশির সময় মুখ ঢেকে রাখা এবং দূরত্ব বজায় রাখলেই আমরা এই ভাইরাসের বিস্তার রোধ করতে পারি। ডেঙ্গুর নতুন ভ্যারিয়েন্টগুলো সাধারণত স্বচ্ছ পানিতে জন্ম নেয়। বাড়ির আশপাশে প্লাস্টিক বোতল, ডাবের খোসা, পলিথিন বা নির্মাণসামগ্রীর কন্টেনারে পানি জমে থাকলে সেখানে এডিস মশার লার্ভা জন্ম নিতে পারে। এমনকি এক বা দুই মিলিলিটার পানিতেও এই মশার জন্ম হতে পারে।
মেয়র সতর্ক করে বলেন, বর্ষার এই সময়ে আমাদের সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে। প্রতিটি বাসায় যেন পানি জমে না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। নির্মাণাধীন ভবনের সামগ্রি ঢেকে রাখা, ফুলের টব, এসি পাইপের পানি এসবের দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা শুধু জনসচেতনতা গড়েই থেমে নেই। লিফলেট বিতরণ, মাইকিং, ব্যানার-ফেস্টুনের পাশাপাশি আমরা ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে অভিযান চালাচ্ছি। যেখানে পাওয়া যাচ্ছে, সেখানে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। অর্থদণ্ড ও কারাদণ্ডও হতে পারে।
মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, জেনারেল হাসপাতাল, মা ও শিশু হাসপাতাল এবং বেশ কয়েকটি প্রাইভেট হাসপাতাল ও ল্যাবে আইসিইউ, হাই-ফ্লো অক্সিজেন এবং আরটি-পিসিআর পরীক্ষার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তবে প্রতিরোধই সবচেয়ে ভালো পথ। মাস্ক ব্যবহার, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং হালকা উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত টেস্ট করানো- এইগুলো মেনে চললেই আমরা বড় বিপদ থেকে বাঁচতে পারবো।
বিডি প্রতিদিন/এএ