পাপিয়া বাংলাদেশের পরিযায়ী পাখি। গ্রীষ্মকালে দেশের সব গ্রামাঞ্চলে দেখা যায়। এটি করুণ পাপিয়া নামেও পরিচিত। করুণ সুরে ডাকে বলেই হয়তো তাদের নাম হয়েছে করুণ পাপিয়া। এরা কোকিল গোত্রের পাখি। এলাকা ভেদে এরা ‘সরগম’ নামেও পরিচিত। এ পাখিকে নিয়ে কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছিলেন ‘পিউ পিউ বিরহী পাপিয়া বোলে’ বা ‘পিউ পিউ বোলে পাপিয়া’ গান। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের উত্তরাঞ্চল থেকে চীনের দক্ষিণাঞ্চল ও ইন্দোনেশিয়াসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এদের বিস্তৃতি। এ প্রজাতি বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী আইনে সংরক্ষিত। এরা লম্বায় ২২-২৩ সেন্টিমিটার। স্ত্রী ও পুরুষ পাখির চেহারায় ভিন্নতা রয়েছে। পুরুষ পাখির মাথা, ঘাড়ের পাশ, থুঁতনি ও গলা ছাই-ধূসর রঙের। লেজ ধূসর-কালো, ডগায় সাদা ডোরা রয়েছে। বুকের ওপরের দিকে কমলা-ধূসর, নিচ থেকে লেজের তলা পর্যন্ত কমলা।
স্ত্রী পাখির চেহারা দুই ধরনের। এক ধরনের চেহারা পুরুষ পাখির মতো। পিঠ লালচে-বাদামি। লেজের ওপর-নিচ থাকে কালো ডোরা। উভয় পাখির ঠোঁট কালচে-বাদামি। অপ্রাপ্তবয়স্কদের মাথায় কালচে-বাদামি ডোরা। গলা ও বুক লালচে-কমলা।
এপ্রিল থেকে আগস্ট এদের প্রজনন কাল। এরা নিজেরা বাসা বাঁধতে জানে না। তাই অন্যের বাসায় ডিম পাড়ে। অন্য পাখিরা নিজের ডিম ভেবে তা দিতে ছানা ফুটায়। এরা একাকী বিচরণ করে। কখনো জোড়ায় জোড়ায়ও দেখা যায়।
সম্প্রতি চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙা থেকে করুন পাপিয়ার ছবি তুলেছেন শৌখিন ফটোগ্রাফার শাকিল আহমেদ। তিনি বলেন, করুন পাপিয়া আমাদের দেশি পাখি হলেও সংখ্যায় অনেক কম। সব এলাকায় এদের আর দেখা যায় না। গ্রাম-গঞ্জের উঁচু গাছ-গাছালিতে বিচরণ করে।’