নাটোর জেলার চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে জেলা শহর, সদর ও নলডাঙ্গা উপজেলা নিয়ে গঠিত নাটোর-২ সংসদীয় আসন। এখানে বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থী হওয়ার জন্য কোনো দৌড়ঝাঁপ নেই। দুই দলেই রয়েছে একক প্রার্থী। ৩ লাখ ৮৪ হাজার ২৯ জন ভোটারের এই আসনে দুজনই যাঁর যাঁর দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে দুটি উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভার প্রতিটি ইউনিয়নে নিয়মিত জনসমাবেশ ছাড়াও নানাভাবে নির্বাচনি তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন। দলের নেতা-কর্মীরা তাঁদের দল ও প্রার্থীর জন্য মাঠ গোছাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
নাটোর বিএনপিতে দলের কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক উপমন্ত্রী এই আসন থেকে বারবার নির্বাচিত সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর কথাই এখানে দীর্ঘদিন থেকে শেষ কথা হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। তিনিই এখানে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী।
রাজনৈতিক মামলায় সাত বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ায় তিনি গত দুইটি সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেননি। সেই দুইটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তাঁর সহধর্মিণী জেলা বিএনপির তৎকালীন সহসভাপতি ছাবিনা ইয়াসমিন ছবি। চলতি বছরের শুরুতে আদালতে আপিলের রায়ে দুলুসহ ৬৮ জন দণ্ডপ্রাপ্তকে খালাস দেওয়ায় এখন আর তাঁর নির্বাচনে প্রার্থী হতে বাধা নেই। ফলে নাটোর সদর আসনে এবারও বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু।
জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহীন বলেন, নাটোর বিএনপিতে দুলুই শেষ কথা। তাঁর সঙ্গে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো দলে অন্য কোনো নেতা নেই বলেও তিনি দাবি করেন।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক রহিম নেওয়াজ বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছর আওয়ামী লীগ লুটপাট ছাড়া নাটোরের কোনো উন্নয়ন করেনি। নাটোরের যত উন্নয়ন- স্কুল, কলেজ, রাস্তাঘাট সব করেছেন দুলু। তিনি মন্ত্রী থাকার সময় দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে জেলার উন্নয়ন করেছেন। তাই নির্বাচন এলে নাটোরের মানুষ দুলুকে উজাড় করে ভোট দিতে কার্পণ্য করবে না।
অপরদিকে নাটোর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির বাগাতিপাড়া সরকারি কলেজের ইংরেজি বিষয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক ইউনুস আলীকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী প্রার্থী প্রয়াত শংকর গোবিন্দ চৌধুরীর কাছে খুব সামান্য ভোটে পরাজিত হয়ে নাটোরে সাড়া ফেলে দেন অধ্যাপক ইউনুস।
জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক ড. মীর মো. নূরুল ইসলাম বলেছেন, জামায়াতের পক্ষ থেকে অনেক আগেই অধ্যাপক ইউনুস আলীকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। প্রার্থীসহ নেতা-কর্মীরা মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তাঁরা সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছেন। তাই সাধারণ ভোটাররা এবার জামায়াতের প্রার্থীদের মূল্যায়ন করবেন বলে তাঁরা বিশ্বাস করেন।