প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে এবার ভারতের দেখানো পথে হাঁটল আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবান সরকার। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা মাওলাবি হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার নির্দেশে যত দ্রুত সম্ভব কুনার নদীর ওপর বাঁধ নির্মাণ করার ঘোষণা করা হয়েছে। এই পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো পাকিস্তানের দিকে নদীর পানি প্রবাহ সীমিত করা। এতে আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতিতে উত্তেজনা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত পানিসম্পদ মন্ত্রী মোল্লা আবদুল লতিফ মনসুর এক এক্স পোস্টে নিশ্চিত করেছেন, এই নির্মাণকাজ দ্রুত শুরু হবে। এটি পরিচালনা করবে দেশীয় সংস্থাগুলো। তিনি বলেছেন, আফগানদের তাদের নিজেদের জল সম্পদ ব্যবস্থাপনার অধিকার আছে।
পাকিস্তানের সাথে প্রায় ২৬শ' কিলোমিটার দীর্ঘ ডুরান্ড লাইনে নিয়ে বর্তমানে আফগানিস্তানের সংঘর্ষ চলছে। পাকিস্তানের অভিযোগ, তেহরিক-ই-তালেবানের পাকিস্তানের (টিটিপি) মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সমর্থন করছে আফগানিস্তান।
পাকিস্তানের দিকে পানি প্রবাহ সীমিত করার এই পদক্ষেপটি ভারতকে অনুসরণ করে নেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পেহালগামে হামলার পর ভারত ৬৫ বছরের পুরোনো সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ভারত।
প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ কুনার নদীর উৎপত্তি পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের চিত্রাল জেলায়। সেখান থেকে এটি আফগানিস্তানে প্রবেশ করে এবং কুনার ও নাঙ্গারহার প্রদেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কাবুল নদীর সঙ্গে মিলিত হয়। এরপর এই সম্মিলিত নদী (যার সাথে পেচ নদীর পানিও যুক্ত হয়) আবার পূর্বে ঘুরে পাকিস্তানে প্রবেশ করেছে। শেষে আত্তোক শহরের কাছে সিন্ধু নদের সাথে মিলিত হয়।
এই নদী পাকিস্তানের অন্যতম বৃহত্তম পানির উৎস। এটি দেশটির কৃষি, পানীয় জল এবং জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে সহিংসতা-বিধ্বস্ত খাইবার পাখতুনখোয়া অঞ্চলের জন্য এই নদীর ভূমিকা ব্যাপক।
আফগানিস্তান যদি পাকিস্তানের ভূখণ্ডে প্রবেশ করার আগেই কুনার/কাবুল নদীর ওপর বাঁধ নির্মাণ করে তবে তা পাকিস্তানের খামার ও মানুষের জন্য পানির অভাব আরও বাড়াবে।
সূত্র: এনডিটিভি
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল