যে প্রক্রিয়ায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাদ দেওয়া হয়েছিল, তা ছিল পরিকল্পিত। আর শেখ হাসিনা এ ব্যবস্থা বিলুপ্তির মাধ্যমে একনায়কতন্ত্র কায়েম করেছিলেন। তাই নির্বাচনব্যবস্থা সঠিক নিয়মে দাঁড় করাতে হলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিকল্প নেই।
গতকাল প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানিতে এসব কথা বলেন জামায়াতের নিয়োজিত আইনজীবী শিশির মনির। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত পরবর্তী শুনানি মুলতবি করেছেন। শুনানির সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ। বিএনপি মহাসিচবের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল। ‘সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক’র সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ আপিলকারী পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া। ১৪ বছর আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে রায় দিয়েছিলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ। এ রায় নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়।
খায়রুল হকের বিরুদ্ধে রায় পরিবর্তনের অভিযোগ ওঠে। জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে গত বছর শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এ রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে গত বছর ২৭ আগস্ট আবেদন করেন ‘সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক’-এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ ব্যক্তি। পরে ১৭ অক্টোবর আবেদন করেন বিএনপি মহাসিচব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২৩ অক্টোবর আরেকটি আবেদন করেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। এ ছাড়া আরেকটি আবেদন করেন নওগাঁর রানীনগরের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন। এরপর আরও দুটি আবেদন করা হয়। রিভিউ আবেদনে আপিল করার অনুমতি দিয়ে আপিল শুনানি হবে, নাকি রিভিউ আবেদনেই চূড়ান্ত শুনানি হবে, এ নিয়ে দুই দিন শুনানির পর গত ২৭ আগস্ট সর্বোচ্চ আদালত সিদ্ধান্ত জানান। ছয়টি আবেদনের মধ্যে একটি আবেদনে আপিলের অনুমতি দিয়ে চারটি আবেদন এর সঙ্গে যুক্ত করে দেন আপিল বিভাগ। অন্য আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ (আইট অব লিস্ট) দিয়ে শুনানির দিন ধার্য করেছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার শুনানি শুরু হয়।