একই পরিবারের একাধিক সদস্যের নামে নিয়মবহির্ভূতভাবে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) সার ডিলারশিপ নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার সাবিনা খানের বিরুদ্ধে। সাবিনা খান সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর আত্মীয় এবং পাবনার কৃষক লীগ নেত্রী।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সাবিনা খাতুন নিজের নামসহ বাবা, মা, চাচা, মামা ও দুই বোনের নামে ডিলারের লাইসেন্স নিয়েছেন। এর মধ্যে দুর্গাপুর উপজেলায় দুটি, বাঘা উপজেলায় একটি ও চারঘাট উপজেলায় একটি ইউনিয়নে তাদের নামে ডিলারশিপ আছে। বাকি তিনটি আছে পাবনা সদর উপজেলায়।
সাবিনা খাতুনের ডিলারশিপ দুর্গাপুরের দেলুয়াবাড়ী ইউনিয়নে। তার প্রতিষ্ঠানের নাম বাপ্পি এন্টারপ্রাইজ। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, সাবিনা দুর্গাপুরের স্থায়ী বাসিন্দা নন। তিনি পাবনা শহরে বসবাস করেন। ২৫-৩০ বছর আগে দুর্গাপুর থেকে চলে গিয়ে পাবনায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। ভুয়া কাগজপত্র জমা দিয়ে তিনি দেলুয়াবাড়ী ইউনিয়নের ডিলারশিপ নিয়েছেন।
সাবিনার চাচা কালাম উদ্দিন দুর্গাপুর উপজেলার পানানগর ইউনিয়নের সার ডিলার এস এস এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী। তিনিও একইভাবে ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে ডিলারশিপ নিয়েছেন। নানা অনিয়মের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আগেই সম্প্রতি তিনি লাইসেন্স জমা দিয়েছেন। কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে তার সার বরাদ্দ স্থগিত করেছে। এ বছরের ১৭ জানুয়ারি যশোরের অভয়নগর থানা পুলিশ অবৈধভাবে ৮৮ মেট্রিক টন সার পাচারের সময় একটি ট্রাক আটক করে। এ ঘটনায় কালাম উদ্দিনসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়।
সাবিনার মামা রেজাউল করিম (রাফসান এন্টারপ্রাইজ) রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মনিগ্রাম ইউনিয়নের ডিলার ছিলেন। অনিয়মের অভিযোগে তার লাইসেন্সও বাতিল করেছে কর্তৃপক্ষ। আর চারঘাট উপজেলায় মলিনা এন্টারপ্রাইজের নামে নেওয়া ডিলারশিপের স্বত্বাধিকারী তার আপন বোন মলিনা খান। সাবিনা খান স্বীকার করে বলেন, ‘লাইসেন্সগুলো আমার আত্মীয়দের নামে আছে। এগুলো পেতে অনেক কষ্ট হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা ২৫ বছর আগে দেলুয়াবাড়ী ইউনিয়নের আমগ্রামে বসবাস করতাম। সেখানে আমার জমি ও বাড়ি আছে। সে সময় আমরা সেখানকার নাগরিক ছিলাম।’ দুর্গাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাহানা পারভীন লাবণী বলেন, ‘বাপ্পি এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আছে আমরা জানি। ইতোমধ্যে পানানগর ইউনিয়নের এস এস এন্টারপ্রাইজের নানা অনিয়মের অভিযোগে তার লাইসেন্স স্থগিতের সুপারিশ করার পাশাপাশি সার বরাদ্দ বন্ধ রাখা হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে সেসব ডিলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’