হামজা, সামিত, ফাহমিদুল ও জায়ানদের মতো মানসম্পন্ন প্রবাসী ফুটবলার জাতীয় দলে খেলার পর নিস্তেজ ফুটবলে কিছুটা প্রাণের সঞ্চার হয়েছে ঠিকই। তবে পুরুষ দলে দুর্দশা কাটছেই না। কেননা হামজারা খেলার পরও এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে জয় পায়নি। ‘সি’ গ্রুপে দুই ম্যাচের মধ্যে দুই ড্র আর দুই হারে ৪৫ বছর পর এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলার স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে। ফুটবলে সাফল্য এখন নারীকেন্দ্রিক। জাতীয় ও বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টে অসংখ্য ট্রফি জেতার কৃতিত্ব রয়েছে মেয়েদের। পুরুষ জাতীয় দল ২০০৩ সালে শেষবার সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়ন হলেও মেয়েরা ২০২২ ও ২০২৪ সালে দুই আসরে টানা দুবার অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
নারী জাতীয় দলের আরও বড় কৃতিত্ব হচ্ছে এশিয়ান কাপে চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নেওয়া। তা ছিল প্রত্যাশার বাইরে। গ্রুপ পর্বে শক্তিশালী মিয়ানমারকে তাদের মাটিতেই হারিয়ে এশিয়ান ফুটবলে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে জায়গা করে নেওয়াটা গৌরবের। আগামী বছরে অস্ট্রেলিয়ায় স্বপ্নের আসরে খেলবেন আফঈদা খন্দকাররা। কঠিন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে কঠিন লড়াই। তাই প্রস্তুতিটা হতে হবে জোরালো। অনুশীলনের পাশাপাশি প্রীতি ম্যাচ খেলে পারফরম্যান্স ঝালাই করে নিতে হবে। বাফুফে সেভাবে কি নারী জাতীয় দলকে গুরুত্ব দিচ্ছে? মিয়ানমারে খেলার পর তিন মাসের বেশি সময় ধরে জাতীয় দল মাঠে নেই। এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বের প্রস্তুতি হিসেবে আফঈদা খন্দকাররা ১১১ দিন পর আজ মাঠে ফিরছেন। থাইল্যান্ডের মাটিতে থাই মেয়েদের বিপক্ষে লড়বে বাংলাদেশ। ২৭ অক্টোবর দুই দেশের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচ।
শক্তির বিচারে স্বাগতিকদের এগিয়ে রাখতেই হবে। র্যাঙ্কিংয়েও ব্যবধান অনেক। বাংলাদেশ ১০৪ ও থাইল্যান্ডের অবস্থান ৫৩। ফল যাই হোক, থাইল্যান্ডের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে খেলাটা উপকারে আসবে। থাইল্যান্ডে পৌঁছানোর পরই মেয়েরা অনুশীলনে নেমেছে। হেড কোচ পিটার বাটলার বলেছেন, ‘থাইল্যান্ড শক্তিশালী হলেও আমাদের মেয়েরা যোগ্য জবাব দেবে। তাদের ওপর আমার আস্থা রয়েছে’। অধিনায়ক আফঈদা বলেন, ‘আশা রাখি সেরাটা দিতে পারব’। ফুটবলে থাইল্যান্ড বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরোনো বন্ধু। সত্তরের দশক থেকেই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। দুই দেশের বিভিন্ন টুর্নামেন্টে পুরুষ জাতীয় দল অংশ নিত। আগাখান গোল্ডকাপে থাইল্যান্ডের বিভিন্ন ক্লাব অংশ নিত। তেমনি ব্যাংককে কিংস কাপে বাংলাদেশ খেলত। ১৯৭৮ সালে থাইল্যান্ড এশিয়ান গেমসে ফুটবলে প্রথম বাংলাদেশ অংশ নিয়েছিল। সেই থাইল্যান্ডই কি না এখন কত অচেনা। মেয়েদের প্রীতি ম্যাচ দিয়ে ফুটবলে বন্ধুত্ব আবার তৈরি হয় কি না, সেটাই দেখার বিষয়।