রংপুরের খালাশপীর কয়লাখনিতে উত্তোলন কার্যক্রম শুরু হলে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। এখানকার কয়লা দিয়ে দেশের ৫০ বছরের চাহিদা পূরণ হবে। পাশাপাশি বাড়তি কয়লা রপ্তানি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা যাবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সরকারের সিদ্ধান্ত না পাওয়ায় এত সম্ভাবনার এ খনি থেকে ১৯ বছরেও কয়লা উত্তোলন সম্ভব হয়নি।
২০০৬ সালের আগস্টে এখানকার কয়লাসংক্রান্ত সমীক্ষা রিপোর্ট বাংলাদেশ খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো অধিদপ্তর, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, পেট্রোবাংলাসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়। এখন পর্যন্ত আলো পড়েনি লালফিতায় বন্দি সেই ফাইলে। যদিও এ প্রকল্পে কাজ করছেন ১০ কর্মকর্তা-কর্মচারী।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খালাশপীর কয়লা খনি দেশের মূল্যবান সম্পদ। এ খনি থেকে কয়লা উত্তোলন শুরু হলে এখানকার মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে। হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে, কমবে বেকারত্ব। এখানকার কয়লা দিয়ে দেশের ৫০ বছরের চাহিদা পূরণ হবে। একই সঙ্গে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনও সম্ভব হবে।
খনির এক সূত্র জানান, রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে মাগুরা গ্রামে ১৯৫৯ থেকে ’৬২ সাল পর্যন্ত ওই খনির অবস্থান নির্ণয় করা হয়। ১৯৮৯-৯০ সালে ২৫ বর্গকিলোমিটার খনি এলাকায় প্রাথমিকভাবে চারটি কূপ খনন করে তিনটিতে ২৮৪ থেকে ৪৮০ মিটার গভীরতায় উন্নতমানের বিটুমিনাস কয়লার সন্ধান পাওয়া যায়। খনিতে ৮২৮ মিলিয়ন টন কয়লার মজুত থাকলেও সম্ভাব্য মজুতের পরিমাণ ধরা হয়েছে ৬৭৫ মিলিয়ন টন। গড়ে ২৫৭ মিটার মাটির নিচে এ কয়লার মজুত রয়েছে। সূত্রমতে খালাশপীর কয়লা খনির ৭ বর্গকিলোমিটার এলাকায় কোকিং কোল জাতের উন্নতমানের কয়লার স্তরের সন্ধান পাওয়া গেছে, যার শতকরা ২৫ ভাগই অনায়াসে উত্তোলন করা সম্ভব। এখানে বিটুমিনাস নামে উচ্চ জ্বালানি ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লা রয়েছে। এতে ক্ষতিকর সালফারের উপস্থিতি ১ ভাগেরও কম। খনির এক স্তরে ধাতু গলানোর কাজে ব্যবহৃত কোকিং কোল ও চুনাপাথর এবং কাচবালু রয়েছে, যার বিশাল চাহিদা আন্তর্জাতিক বাজারে। খালাশপীর কয়লা খনি প্রকল্পের ডিজিএম অনুপ কুমার রায় বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন গবেষণার কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। কয়লা উত্তোলনের বিষয়টি সরকারের ওপর নির্ভর করছে।’