চট্টগ্রাম বন্দরের ট্যারিফ ইস্যুতে পোর্ট ইউজার্স ফোরামের দেওয়া আলটিমেটাম শেষ হচ্ছে আজ। ১৮ অক্টোবর এক প্রতিবাদ সভায় বর্ধিত ট্যারিফ এক সপ্তাহের মধ্যে স্থগিত না করলে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে হঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ফোরামের আহ্বায়ক আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী।
সংশ্লিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আলটিমেটামের সময়সীমা শেষ হতে চললেও এখনই কঠোর কর্মসূচিতে যাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। এ বিষয়ে সরকার কী পদক্ষেপ নেয়, তারা আরও কয়েক দিন পর্যবেক্ষণ করতে চান। যদি এই অপেক্ষার পরও সরকার নমনীয় মনোভাব না দেখায়, তাহলে বন্দর ব্যবহারকারী পক্ষগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে করণীয় নির্ধারণ করা হবে।
পোর্ট ইউজার্স ফোরামের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আমিরুল হক বলেন, আলটিমেটামের কিছু সুফল এরই মধ্যে পাওয়া গেছে। গেট পাস প্রায় ৪০০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছিল। আন্দোলনের মুখে সেটি স্থগিত করা হয়েছে। গড়ে ৪১ শতাংশ চার্জ বাড়ানোর কথা বলাবলি হলেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৬০০ শতাংশ পর্যন্ত চার্জ বাড়ানো হয়েছে। এটা অযৌক্তিক। ইজ অব ডুয়িং বিজনেসের পরিপন্থি। সরকারকে অবশ্যই নতুন ট্যারিফ কাঠামো স্থগিত করে অংশীজনদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ট্যারিফ ঠিক করতে হবে।
তিনি বলেন, আশা করছি, প্রধান উপদেষ্টা ও নৌপরিবহন উপদেষ্টা আমাদের দাবির বিষয়ে সাড়া দেবেন। আগামী ২৯ অক্টোবর ব্যবসায়ীদের নিয়ে আরও একটি সভা হবে। সেখানে করণীয় নির্ধারণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ৩৯ বছর পর ১৪ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরের নতুন ট্যারিফ কাঠামোর প্রজ্ঞাপন জারি হয়। এতে বন্দরের বিভিন্ন সেবার ওপর গড়ে চার্জ বাড়ে ৪১ শতাংশ। ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন ট্যারিফ কার্যকরের কথা থাকলেও বন্দর ব্যবহারকারীদের আপত্তিতে এক মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এ সময়ের মধ্যে কোনোরকম আলাপ-আলোচনা না করে বন্দর কর্তৃপক্ষ ১৫ অক্টোবর থেকে নতুন ট্যারিফ কার্যকর করে। ওই দিন থেকেই বন্দরে গাড়ি প্রবেশের ফি ৫৭ টাকার স্থলে ২৩০ টাকা আদায় শুরু হলে কনটেইনার বহনকারী লরি মালিকরা গাড়ি চালানো বন্ধ করে দেয়। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেন ট্রাক মালিক-শ্রমিকরা। একই সময়ে দুই দিন চার ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করে চট্টগ্রাম সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন। এতে বন্দরের কার্যক্রম একপ্রকার স্থবির হয়ে পড়ে। পরে বন্দর কর্তৃপক্ষ বর্ধিত প্রবেশ ফি স্থগিত করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।