সাপে কাটা রোগীর জন্য বিশেষায়িত একটি ওয়ার্ড চালু করেছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল। সাপে কাটায় মৃত্যুর হার কমিয়ে আনতে এবং দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ উদ্যোগ নিয়েছে। বৃহস্পতিবার রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ এ বিশেষায়িত ওয়ার্ডের উদ্বোধন করেন।
হাসপাতালের পুরোনো ক্যানটিনের জায়গায় ১২ শয্যার হাই ডিপেনডেনসি ইউনিট (এইচডিইউ) মানের এ ওয়ার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। এখানে সাপে কাটা রোগীর শ্বাসকষ্ট, হৃদযন্ত্রের ব্যর্থতা ও অন্যান্য জটিলতারও চিকিৎসা হবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওয়ার্ডে আটজন পুরুষ ও চারজন নারী রোগীর জন্য শয্যা রাখা হয়েছে। তবে জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন হলে ওয়ার্ডের বাইরেও দেওয়া হবে সেবা। ওয়ার্ডের ফোকালপারসন হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবু শাহীন মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান। তিনি বর্তমানে রাসেলস ভাইপারের বিষ নিয়ে পিএইচডি করছেন, যা শেষ পর্যায়ে রয়েছে। হাসপাতালের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ১ হাজার ২০৫ জন সাপে কাটা রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে ২৬০ জন বিষধর সাপের কামড়ে আক্রান্ত ছিল। বাকিরা নির্বিষ সাপের আক্রমণের শিকার হয়। হাসপাতালে আসা রোগীর মধ্যে ৩০ জন মারা গেছে। এর মধ্যে ১০ জন রাসেলস ভাইপারের কামড়ে, বাকিরা কালাচ, কেউটে ও গোখরার কামড়ে মারা যায়।
হাসপাতাল সূত্র জানান, মৃত্যুহার কমাতে ডেঙ্গু, করোনা, নিপাহ ভাইরাসের মতোই সাপে কাটা রোগীর জন্যও বিশেষায়িত ওয়ার্ড করার সিদ্ধান্ত নেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহাম্মদ। এজন্য আগেই চিকিৎসক ও নার্সদের বাছাই করে ‘স্নেকবাইট ন্যাশনাল গাইডলাইন’ অনুযায়ী প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
এরপর এইচডিইউ মানের ওয়ার্ডটি প্রস্তুত করা হয়। এফ এম শামীম আহাম্মদ বলেন, ‘সাপে কাটা রোগী অনেক সময় দেরি করে হাসপাতালে আসেন। আগেও দেখা যেত বড় ওয়ার্ডের এক কোনায় তাদের চিকিৎসা হতো। এখন আলাদা ওয়ার্ড থাকায় তা হবে না। এখানে একেবারেই মেডিকেল ইমারজেন্সি ইউনিট, এইচডিইউ সুবিধাসহ ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসক ও নার্সের উপস্থিতি থাকবে।’