১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ১৯:৪৪
সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাচন

দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন মোতালেব, খুশি নন এমপি নদভী!

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম:

দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন মোতালেব, খুশি নন এমপি নদভী!

এমএ মোতালেব

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও শিল্পপতি এমএ মোতালেব। এই মনোনয়নে খুশি হননি আওয়ামী লীগ মনোনীত সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার স্থানীয় সংসদ সদস্য ও মরহুম কেন্দ্রীয় জামায়াত নেতার জামাতা আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী। 

নিজের ফেসবুক পেজে দেয়া এক স্ট্যাটাসে দলীয় প্রার্থীতা নিয়ে নিজের অভিমতে জেলা ও থানার আওয়ামী লীগ নেতারা দলীয় প্রার্থীতা ঘোষণা নিয়ে কোন আলোচনা করেননি বলে জানান। তবে দলীয় প্রার্থীকে (এমএ মোতালেব) অভিনন্দন জানিয়েছেন এমপি নদভীর স্ত্রী মহিলা নেত্রী রিজিয়া রেজা চৌধুরী। এর আগে দলীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় তাকে (এমএ মোতালেব) নৌকার প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

অন্যদিকে একজন সংসদ সদস্য (নদভী) হিসেবে দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতা করে দেয়া এমন অভিমতে তৃণমূল আওয়ামী লীগের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনাসহ বিভিন্ন স্থানে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে এমন স্ট্যাটাস দিয়ে এমপি নদভী ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন বলেও মন্তব্য করেছেন জেলা ও উপজেলার নেতারা।

উপজেলা নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্ত সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা এমএ মোতালেব বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনোনয়ন দেয়ায় আমি কৃতজ্ঞ। দলসহ সামাজিকভাবে সেবামূলক কাজ করে আসছি দীর্ঘ দিন ধরেই। এতে সাতকানিয়ার বিভিন্ন দলের মানুষসহ সাধারণ মানুষ দল-মত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভোটে জয়যুক্ত করবেন। 

তিনি বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধির কারণে এমপিরা উপস্থিত থাকতে না পারলেও প্রত্যেকের সমর্থন রয়েছেন এবং এমপি নদভীর স্ত্রী মহিলা নেত্রী রিজিয়া রেজা চৌধুরী অভিনন্দন জানিয়েছেন। তবে সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার স্থানীয় সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা ও দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে কেউ কিছু করতে পারবেন না। তিনি (সভানেত্রী) যাকেই মনোনয়ন দিয়েছেন তার পক্ষে সবাই কাজ করতে হবে। এর বাইরে একজন এমপি বা অন্য কেউ কি বলেছেন, কি বলেননি সেটি দেখার বিষয় নেই। তাছাড়া তিনি (নদভী) যখন জাতীয় নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছিল তখন কেউ বিরোধিতা করেননি। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত সবাই মেনে উনার পক্ষেই কাজ করেছেন। তিনি বলেন, দলীয় মনোনয়ন দেয়ার এখতিয়ার একমাত্র প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনার। প্রধানমন্ত্রীর বাইরে এটা নিয়ে কারো মুখে কোন ধরণের মন্তব্য করাও সংগঠন বিরোধী। তবে যিনি (এমএ মোতালেব) মনোনয়ন পেয়েছেন, তিনি একজন ক্লিন ইমেজের মানুষ হিসেবেই মনোনয়ন পেয়েছেন বলে জানান তিনি।  

জানা যায়, আওয়ামী লীগের এমপি নদভীকে নিয়েও রয়েছে নানান বির্তক। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খোরশেদ আলম চৌধুরী নৌকার মনোনয়ন পেলেও দল পরিবর্তন করা জিয়াউল হক চৌধুরী বাবুল জয়ী হন। এমপি নদভীর ভূমিকার কারণেই নৌকার প্রার্থী খোরশেদ আলম পরাজিত হয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছিল লোহাগাড়া আওয়ামী লীগের নেতারা। এবার সাতকানিয়াতেও দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় লোহাগাড়ার পুনরাবৃত্তি হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তাছাড়া একসময়ে জামায়াত ঘরানোর নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী। নদভীর শ্বশুর মাওলানা মুবিনুল হক চৌধুরী ছিলেন জামায়াতের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা। ২০১৪ সালে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে দশম জাতীয় সংসদে সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য হন নদভী। দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে সমন্বয় না করে জামায়াত প্রীতির অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। একইভাবে লোহাগাড়া আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা এমপির বিরুদ্ধে অবস্থান নেন।

বিডি প্রতিদিন/মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর