৮ এপ্রিল, ২০২০ ১৬:১২

চট্টগ্রামে মানছেই না লকডাউন, শহর-গ্রামে বসেছে ‘চাঁদের হাট’

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম:

চট্টগ্রামে মানছেই না লকডাউন, শহর-গ্রামে বসেছে ‘চাঁদের হাট’

চট্টগ্রাম নগরের ২নং গেইট এলাকার ব্যস্ততম কর্ণফুলী কাঁচা বাজার। সাধারণ সময়ে প্রতিদিনই এখানে ক্রয়-বিক্রয় হয়। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস প্রকোপের এই সময়েও চলছে অবাধে ক্রয়-বিক্রয়। কাঁচা বাজারের দৃশ্য দেখে বুঝার কোনো নেই যে, দেশে এখন লকডাউন চলছে। সরকার নিরাপদ দূরত্ব বজার রাখতে বলছে। 

বুধবার দুপুরে দেখা যায়, অসংখ্য ক্রেতা বিক্রেতা স্বাভাবিক সময়ের মতই বাজার করছে। কেবল কি নগরে? মফস্বলের বাজারের চিত্রও অভিন্ন। সকালে হাটহাজারী উপজেলার চৌধুরী হাট থেকে শুরু করে আমানবাজার, ইসলামিয়া হাটসহ একাধিক বাজারে অভিযান চালিয়ে ক্রেতাবিক্রেতা শূন্য করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুহুল আমীন। কিন্তু কিছুক্ষণ পরে আবার আমান বাজার এসে দেখা যায় পূর্বের অবস্থায় ফিরে এসেছে বাজারটি। সবাই বহাল তবিয়তে স্বাভাবিক সময়ের মত চাঁদের হাট বসিয়ে বাজার করছেন।

চলছে বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস প্রকোপের সময়। প্রতিদিনই রুটিন করে বাড়ছে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। ফলে সরকার করোনা প্রতিরোধে জীবনযাত্রা পরিবর্তন এবং নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে। কিন্তু কিছু মানুষ সরকারি এসব নিয়মকে গুরুত্ব না দিয়ে ইচ্ছা মত চলাফেরা করছে। এতে বিপদ আরো সন্নিকটে আসার সম্ভাবনা আছে বলে জানা যায়।   

হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুহুল আমীন বলেন, ‘প্রশাসন আইন প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন করছে। কিন্তু আইনটা মানতে হয় মানুষকে। অথচ মানুষ আইনকে পাত্তাই দিচ্ছে না। টানা প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়কের অন্তত পাঁচটি বাজারে সরেজমিন ঘুরে অনুরোধ করে বাজারের ক্রেতাবিক্রেতাদের উঠিয়ে দিই। কিন্তু এক ঘণ্টা পর আবারো সেই সব বাজারে চাঁদের হাট বসিয়ে বিকিকিনি চলছে। মানুষের মানসিকতা দেখে আশ্চর্য্য হই। অনেকে এখনো করোনাভাইরাসের বিষয়টিকে হালকা করে দেখছে।’

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মামনুন আহমেদ অনীক বলেন, ‘প্রতিদিনই অভিযান পরিচালনা করে সতর্ক ও সচেতন করা হচ্ছে। তবুও মানুষ বুঝছে না। অথচ বিশ্বের বড় বড় দেশগুলো এই করোনাভাইরাসের কাছে  অসহায় হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে সবাইকেই সতর্ক হওয়া উচিত।’

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, নগরের ১২টি থানা এলাকায় প্রতিদিন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে চারটি টিম সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করছেন। একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তিনটি থানা এলাকা মনিটিরিং করেন। সকাল-বিকাল দুই ভাগে ভাগ হয়ে পরিচালিত এ সব অভিযানে হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত, অবাধ চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে দোকান খোলা রাখাসহ বিভিন্ন অনিয়ম তদারকি করা হয়। প্রতিদিন অভিযানে মামলা ও জরিমানা করা হয়। অন্যদিকে উপজেলা এলাকায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সহকারি কমিশনার (ভূমি) অভিযান পরিচালনা করছেন। কিন্তু অভিযান, জরিমানা ও মামলায়ও মানুষদের নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না বলে জানা যায়।

বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর