চট্টগ্রামে আবারও অস্থিরতা শুরু হয়েছে সেই পিয়াজের বাজারের। সিন্ডিকেটসহ নানাবিধ কারণে প্রতিদিনই বাড়ছে পিয়াজের দাম, বাড়ছে ভোগান্তি এবং অস্থিরতাও। চট্টগ্রামের বাণিজ্যিক প্রাণ কেন্দ্র খাতুনগঞ্জে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছেই দেশি-বিদেশি পিয়াজের দাম।
গত সোমবার রাতেই দাম বাড়িয়ে আজ মঙ্গলবার থেকেই পিয়াজের কেজি প্রতি বেড়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। অনেকেই দাম বৃদ্ধির অজুহাতে বন্ধ করে দিয়েছে পিয়াজ বেচা-বিক্রিও। ফলে চাহিদার তুলনায় আমদানি কমে যাওয়ায় বাজারে পিয়াজের কৃত্রিম সংকটের কারণে মারাত্মক বিপাকে পড়েছে সাধারণ ক্রেতারা। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারত ছাড়া বিকল্প অন্য কোন দেশ থেকে পিয়াজ আমদানি করা গেলে পিয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
খাতুনগঞ্জ ব্যবসায়ীয় ও নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ভারত পূর্ব কোন ঘোষণা ছাড়া হঠাৎ পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ায় অস্থিরতা, সিন্ডিকেটের নানা কৌশলে এক রাতে পিয়াজের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুণ। সিন্ডিকেটের ইন্ধনেই পিয়াজ বেচা-বিক্রয়ও বন্ধও করে দিয়েছে। আবার খুচরা বাজারেও নেই তেমন পিয়াজ।
এতে মারাত্মক বিপাকে পড়েছেন সাধারণ নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষেরা। হঠাৎ করে পর্যাপ্ত পিয়াজ মজুদ থাকলেও কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে ৩৫ টাকার ভারতীয় পিয়াজ এখন বিক্রয় করছেন ৬০-৬৫ টাকায়। আর ৪৫ টাকার দেশিও পিয়াজ বিক্রি করছেন ৮০-৮৫ টাকায়।
খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী নেতা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বন্যাসহ নানাবিধ কারণে পিয়াজ ঠিকমতো আসছে না। এছাড়া করোনার কারণেও ফলন কম হয়েছে, মনে হয়। আবার আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়েছে। এর প্রভাবে এখানেও পড়েছে। ভারত ছাড়া বিকল্প অন্য কোন দেশ থেকে পিয়াজ আমদানি করা গেলে পিয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
তিনি বলেন, আজও বিভিন্ন আড়তে বেশ কয়েকটি ট্রাক পিয়াজ এসেছে। সেগুলো চাহিদার তুলনায় অনেক কম। সরবরাহ না বাড়লে দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান তিনি। মঙ্গলবার সকাল থেকে দেশি-বিদেশি পিয়াজ ৬০-৮০ টাকায় বিক্রি হয় আড়তে।
খাতুনগঞ্জ হামিদুল্লাহ বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. ইদ্রিস বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ভারত থেকে পিয়াজ আমদানি বন্ধের প্রভাবে বাজারে হঠাৎ দাম বেড়ে গেছে। সরকারের সহযোগিতায় বিকল্প পরিকল্পনা করে পিয়াজ আমদানি করতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশি-বিদেশি পিয়াজ যেভাবে বেড়েছে কিছু দিনের মধ্যেই এসব দাম আবারও কমে আসবে। তবে করোনাকালীন পিয়াজের দাম আরও বেশি ছিল, তাই অস্থিরতার না দেখিয়ে এবং সরকারের সহযোগিতা পেলেই সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিকল্পনা করে দ্রুত বাজারে আনা হবে বলে জানান তিনি।
খাতুনগঞ্জের মেসার্স বাঁচামিয়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ম্যানেজার মো. আইয়ুব বলেন, দুই সপ্তাহ আগেও খাতুনগঞ্জ-চাক্তাই এলাকায় যে পরিমাণ পিয়াজ আসতো বর্তমানে তা অর্ধেকে নেমে এসেছে। কিন্তু দাম বৃদ্ধিজনিত কারণে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই দামও বেড়েছে।
আমদানিকারক, আমদানিকারকদের কাছ থেকে কিনে সেকেন্ড পার্টি খাতুনগঞ্জ-সহ সারাদেশে পিয়াজ সরবরাহ করে। ফলে পাইকারি বাজারের বিভিন্ন আড়তগুলো শুধুমাত্র কমিশন এজেন্ট হিসাবে আমদানিকারক ও সেকেন্ড পার্টির নির্দেশ অনুযায়ী পণ্য বিক্রি করে আসছে।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর