রাজশাহী কলেজের অর্থনীতি বিভাগের মাস্টার্স ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জেরিন আক্তারকে পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবিতে মৌন র্যালি ও মানববন্ধন করেছেন তার শিক্ষক ও সহপাঠীরা। বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক হবিবুর রহমান ও কলেজের শিক্ষার্থীরা।
গত ২৯ জানুয়ারি রাজশাহীর বানেশ্বরে জেরিনকে পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। জেরিন এখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ন ইউনিটে ভর্তি। সেখানে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে জেরিনকে।
এদিকে, জেরিনের সহপাঠী নাজমুল হক জানান, আগুনে দগ্ধ জেরিন নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার মিজানুর রহমানের স্ত্রী (২৬)। তিনি রাজশাহী কলেজের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। স্বামী মিজানুর রহমান বানেশ্বর বাজারে অবস্থিত একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন। সেই সূত্রে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বানেশ্বর ভূমি অফিসের পেছনে একটি তিন তলা বাসায় ভাড়া থাকতেন। ২৯ জানুয়ারি সকালে জেরিন তার চার বছরের মেয়েকে নিয়ে আরচার্ড একাডেমি নামক একটি বেসরকারি স্কুলে নিয়ে যাওয়ার পথে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যদর্শী আবদুর রাজ্জাক জানান, ওইদিন সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে এক নারীর চিৎকার শুনে ঘুম থেকে উঠে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে দেখেন একজন বোরকা পরিহিত নারী রাস্তায় গড়াগড়ি করে চিৎকার করছে। তার শরীরে আগুন জ্বলছে। এসময় তার পাশে ৪-৫ বছরের একটি শিশু দাঁড়িয়ে ভয়ে কান্না করছে। তাৎক্ষণিক তিনি অন্য প্রতিবেশীদের ডেকে পানি ঢেলে নারীর শরীরের আগুন নিয়ন্ত্রনে আনেন। এরপর তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
আবদুর রাজ্জাক বলেন, ঘটনাস্থলে দুইটি বোতল পাওয়া গেছে যার একটি বোতলে অর্ধেক পেট্রোল ছিল, একটি হাতুড়ি, একটি কাঠের চলা ও একটি গ্যাস লাইট পাওয়া গেছে। ধারনা করা হচ্ছে, বোতলে করে পেট্রোল এনে ওই নারীর শরীরে ঢেলে আগুন দিয়ে পালিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।
পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাকিল উদ্দিন আহমেদ জানান, এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। এমনকি ঘটনার দুই দিন পেরিয়ে গেলেও থানায় এ বিষয়ে কোন মামলা হয়নি। ভিকটিমের স্বজনরা চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত আছে। তারা আসলে পুলিশ মামলা নেবে। তবে অপরাধীদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর আছে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা