বরিশালের উজিরপুর উপজেলার গুঠিয়ার আশোয়ার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেল্টারটি অবশেষে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে প্রায় সোয়া কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভবনটি আকস্মিক নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এর আগে স্থানীয়রা স্কুল ভবনটি রক্ষার নানা চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। ওই সময় পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামিম এমপি সন্ধ্যা নদীর ভাঙ্গন কবলিত ওই এলাকা পরিদর্শন করে দ্রুত ভাঙন প্রতিরোধের নির্দেশ দেন। প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ২ মাস আগে প্রায় ৪ হাজার ৩শ’ বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তাসলিমা বেগম জানান, আশোয়ার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনটি নদী গর্ভে বিলীনের বিষয়টি তিনি শুনেছেন। সাময়িক সময়ের জন্য ওই স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম অন্যত্র স্থানান্তর করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০০৮-২০০৯ অর্থ বছরে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে আশোয়ার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টার ভবনটি নির্মাণ করা হয়। গত কয়েক বছরে সন্ধ্যা নদীর কড়াল গ্রাসে স্থানীয় হানুয়া ও আশোয়ার গ্রামের প্রায় ২শ’ পরিবারের বসত বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। গত ২ বছর ধরে নদী ভাঙনের হুমকিতে পড়ে বিদ্যালয়টি। এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা তাদের বিদ্যায়ল ভবনটি রক্ষার জন্য মানববন্ধনসহ নান কর্মসূচি পালন করে। মাস দুয়েক আগে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নদী ভাঙন পরিদর্শন করে দ্রুত ভাঙন প্রতিরোধের নির্দেশ দেন। ওই সময় ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে বালু বোঝাই ৪ হাজার ৩শ’ জিও ব্যাগ ফেলা হলেও ভাঙন রোধে তা যথেষ্ট হয়নি।
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোসলেম আলী হাওলাদার জানান, মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে সকলের সামনে বিদ্যালয় ভবনটি নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। স্থানীয়রা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ের ভেতরের কিছু মালামাল উদ্ধার করলেও ভবনটি নদীতে বিলীন হয়ে যায়। স্কুলটি পূজার বন্ধ থাকায় কয়েকশ’ শিশু শিক্ষার্থী প্রাণে বেঁচে যায়।
স্থানীয় গৃহবধূ রাবেয়া বেগম জানান, প্রাকৃতিক যে কোন দুর্যোগে তারা ওই সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিতেন। এখন আশ্রয় কেন্দ্রটি বিলীন হওয়ায় দুর্যোগে যাওয়ার কোন জায়গা রইলো না।
স্থানীয় বাসিন্দা নাজিম খলিফা, আবুল হোসেন ফকির ও জহির হাওলাদার বলেন, বিদ্যালয় ভবনটি রক্ষার জন্য প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশে জিও ব্যাগ ফেলা হলেও তা যথাযথ হয়নি। ঠিকাদার দায় সারাভাবে জিও ব্যাগ ফেলার কারণে বিদ্যালয় ভবনটি রক্ষা করা যায়নি।
বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব