তীব্র শীতে কাঁপছে রংপুর অঞ্চল। কাহিল হয়ে পড়েছে এখানকার মানুষের জীবন। সড়কে দুর্ঘটনা এড়াতে গাড়িগুলো ভোর থেকে হেডলাইড জালিয়ে চলাচল করছে।
গত দুই দিনে শৈত্য প্রবাহের দাপটে ঘর থেকে বের হতে পারছে না শিশুসহ বয়বৃদ্ধরা। দেখা দিয়েছে নানা শীত জনিত রোগবালাই।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত দুই দিনে শিশুসহ ১২৫ জন রোগী ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে। রংপুর আবহাওয়া অফিস বলছে এই শৈত্য প্রবাহ আরো কয়েক দিন থাকবে।
রংপুর অঞ্চলের চরগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখনো পর্যন্ত সরকারীভাবে কোন শীতবস্ত পৌঁছায়নি।
তিস্তার চরে বসবাসকারী জোনাব আলী (৫৩) জানান, 'গত দুইদিন থাকি যে শীত বাহে ঘরত থাকি বের হবার পাংনা (পারি না)। হামার তিস্তা পারত খুব ঠান্ডা খালি কাপির নাকচুং। হামাক কায় দেখে বাহে।'
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেও সূর্যের দেখা মিলেনি। ফলে প্রচন্ড ঠান্ডায় এখন নাকাল এই অঞ্চলের প্রায় দুই শতাধিক চরের মানুষের জীবন। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দুর্ভোগে পড়েছেন নদী তীরবর্তী চরাঞ্চল এবং নিম্ন আয়ের শ্রমজীবীরা। শিশু, বয়স্করাও ঠান্ডা জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে কাতরাচ্ছেন। চরাঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষ শীত নিবারণের জন্য খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে।
এদিকে হঠাৎ করেই শীতের তীব্রতা বাড়ায় শীতের কাপড়ের দোকানে ভিড় করছেন শীতার্তরা। তারা বেশি ভিড় করছেনে ফুটপাতের পুরানো কাপড়ের দোকানে। নিজেদের সাধ্যমত কিনছেন শীতবস্ত্র।
রংপুরের গংগাচড়ার লক্ষীটারী ইউনিয়নের চর ইচলি গ্রামের জয়নাল জানান গত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ তিস্তার চরে আশ্রয় নেয়া পরিবারগুলো শীতে কাঁপছে। তাদের জন্য শীতবস্ত্র খুবই প্রয়োজন।
গংগাচড়ার লক্ষীটারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী জানান, এখন পর্যন্ত সরকারীভাবে তার ইউনিয়নের ২৯ টি চরের বাসিন্দাদের শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়নি।
রংপুর সদর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকতা আব্দুল মতিন জানান, রংপুর সদরে ছিন্নমূল ও দারিদ্র মানুষ রয়েছে প্রায় ১৭ হাজার, এখন পর্যন্ত শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে ৩ হাজার ১শ'। তবে আরো শীতবস্ত্রের জন্য আবেদন করা হয়েছে।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শৈত্যপ্রবাহের মাত্রা বেড়েছে। এই অঞ্চলে আজকে তাপমাত্রা দিনাজপুরে সর্বনিম্ন ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস, কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ১০ দশমিক ১ডিগ্রী এবং পঞ্চগরের তেতুলিয়ায় ১০ ডিগ্রী তাপমাত্রা উঠা নামা করছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল