রাজধানীর উত্তরায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) জমিতে অবৈধভাবে মার্কেট নির্মাণের অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এনফোর্সমেন্ট ইউনিট। গতকাল উত্তরার ৭, ৯, ১১ ও ১৩ নম্বর সেক্টরে এ অভিযান চালানো হয় বলে জানান দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য। দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শেখ গোলাম মাওলা ও উপসহকারী পরিচালক মুহাম্মদ শিহাব সালামের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানের সময় দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম রাজউক ও ডেসকোর দখল হওয়া জমি পরিদর্শন করে। সরেজমিন অভিযানে উত্তরার ৭, ৯, ১১ ও ১৩ নম্বর সেক্টরের ২০টি প্লটের মালিকানাসংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, অধিকাংশ প্লটের ক্ষেত্রে কোনো বরাদ্দ প্রদান করা হয়নি। কয়েকটি প্লটের ক্ষেত্রে আদালতে মামলা রয়েছে। রাজউকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, অভিযোগসংশ্লিষ্ট প্লটগুলোয় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে রাজউক একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করেছে। পরে এনফোর্সমেন্ট টিম, রাজউক ও ডেসকো অফিসের একটি সমন্বয়কারী টিম ওই এলাকার প্লটসমূহ সরেজমিন পরিদর্শন করে। সে সময় দেখা যায়, উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের ২৯ থেকে ৮১ নম্বর প্লটের অধিকাংশ অবৈধভাবে দখল করে সেখানে আসবাবপত্রের দোকান, খাবারের হোটেলসহ অন্যান্য দোকান স্থাপন করা হয়েছে। দোকানদারদের বক্তব্যে জানা যায়, তারা উত্তরার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির কাছ থেকে ওই প্লট ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করছেন। দুদক টিম জানতে পারে, সেখানে ৫০-৬০টি দোকান অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে এবং প্রতিটি দোকান থেকে ৫০-৬০ হাজার টাকা হারে মাসিক ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এ বিষয়ে রাজউকের কর্মকর্তারা কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি।
এসব অবৈধ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অবৈধভাবে আবাসিক বৈদ্যুতিক সংযোগ দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। পরে দুদক টিমের উপস্থিতিতে সব অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এ ছাড়া দোকান মালিকদের রাজউকের জমি ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্লটগুলো থেকে মাসিক প্রায় ৫০-৫৫ লাখ টাকার ভাড়া আদায় করা হচ্ছে, যার কোনো অর্থই সরকারি কোষাগারে জমা হচ্ছে না। সার্বিক বিশ্লেষণে রাজউক ওই জায়গা অবৈধ দখলমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি মর্মে দুদক টিমের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। প্লট দখল, অবৈধভাবে ভাড়া উত্তোলনে জড়িত বেশ কিছু ব্যক্তিকে সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ছাড়া খুলনা বিআরটিএ কার্যালয়ে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে দুদক।