কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দেশ ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তার সঙ্গে তার ছোট বোন শেখ রেহানাও ছিলেন। এরপরই গণভবনে মিছিল নিয়ে ঢুকে পড়েন অসংখ্য মানুষ। জনতার দখলে চলে আসে গণভবন। কোথাও দেখা গেছে শেখ হাসিনার ঢাকাই শাড়ি গায়ে জড়িয়েছেন। কেউ আবার গণভবনে বেডরুমে ঢুকে বিছানায় শুয়ে আছেন ছবি ও ভিডিও করছেন। গণভবনের লনে ঘুরে বেড়াচ্ছে মানুষ। সুইমিং পুলে শুধুই ভিড়। বাড়ির ভিতরে সাজানো কাঠের নৌকাও নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে। গণভবনে রিকশাও দেখা গেছে। এসব রিকশায় গণভবনের মালামাল নিতে দেখা গেছে।
দেখা গেছে, গণভবনে উল্লসিত অসংখ্য ছাত্র-জনতার স্রোত। গণভবনের মাঠে তারা হাত উঁচু করে উল্লাস করছেন। স্লোগান দিচ্ছেন। অনেকে গণভবনে ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিস নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। গণভবনে ঢুকে কোরআন শরিফ, টেলিভিশন, ফুল গাছের টব, বালতি, মাছ, ছাগল, হাঁস, মুরগি, লেপ, কাঁথা, বালিশ, চেয়ার, লাগেজ, শাড়ি, ফ্যান, সোফা, মাংস নিয়ে যাচ্ছে। যে যা পারছেন তা নিয়ে বের হয়ে যাচ্ছেন। অনেককে গণভবনের লেকে সাঁতার কাটতেও দেখা গেছে। গণভবনের সাইনবোর্ডও নিয়ে যান একজন।
বিকালে গণভবনের সভাকক্ষে বাদ্যযন্ত্র বাজানোর সঙ্গে সঙ্গে উদ্যম নৃত্যে মেতেছেন বিক্ষোভকারী জনতা। আরেকদিকে ঘড়ি, রাউটার, কাগজ, কম্পিউটার, এসি, ফ্রিজ, গ্যাসের চুলা, খরগোশ, দেয়ালিকা থেকে শুরু করে সবকিছু নিতে বের হচ্ছেন বিক্ষোভকারীদের একাংশ। তবে, গণভবনের ফটকে কিছু বিক্ষোভকারী এসব মালামাল একত্রিত করছেন। জনসাধারণকে নিতে বাধা দিচ্ছিলেন তারা। বিক্ষোভকারীরা বলেন, এ সম্পদ আমাদের। আমরাই নিয়ে যাচ্ছি। আজ আপামর জনসাধারণের বিজয় দিবস।
গতকাল বেলা আড়াইটায় বঙ্গভবন থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টারে শেখ হাসিনা ও বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে যাত্রা করে। তারা রাজধানী ঢাকা ছেড়েছেন। বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা নিরাপদ স্থানে চলে গেছেন। শেখ হাসিনা যাওয়ার আগে একটি ভাষণ রেকর্ড করে যেতে চেয়েছিলেন। তবে তিনি সে সুযোগ পাননি। ধারণা করা হচ্ছে, হেলিকপ্টারটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। এরপরই গণভবনে সাধারণ মানুষ ঢুকে পড়ে।