ঢাকা মহানগরীতে সীমিত পরিসরে শুরু হয়েছে ট্রাফিক পুলিশের কার্যক্রম। ছয় দিন পর তারা মাঠে ফিরেছেন। গতকাল ইন্টারকন্টিনেন্টাল সিগন্যাল থেকে জাহাঙ্গীর গেট পর্যন্ত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা মাঠে নামেন। এসব সড়কে শিক্ষার্থী, বিএনসিসি ও স্কাউটের সদস্যরাও রয়েছেন। ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে যেন শিক্ষার্থীদের কোনো ভুলভ্রান্তি না হয় সেজন্য ছাত্র সমন্বয়কদের সঙ্গে পুলিশ যোগাযোগ করছে। ট্রাফিক পুলিশের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বলেছেন, সোমবার (১২ আগস্ট) সকাল থেকে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের সব পর্যায়ের কর্মকর্তাকে কর্মস্থলে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের পর ভেঙে পড়েছে পুলিশের চেইন অব কমান্ড। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সবচেয়ে বেশি তোপের মুখে পড়েছে পুলিশ। সারা দেশে বাহিনীর থানা ও ট্রাফিক স্থাপনায় হামলা হয়েছে, সদস্যদের মারধর ও হত্যার ঘটনা ঘটেছে। কর্মবিরতিতে চলে যায় পুলিশ। ফলে ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়ে। ট্রাফিক পুলিশ শূন্য ট্রাফিক সিগন্যাল ও সড়কে যান চলাচলের শৃঙ্খলার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেয় ছাত্র-জনতা। গত ৫ আগস্ট থেকেই তারা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছে। কিন্তু দিন যতই যাচ্ছে ঢাকার যানজট ততই বাড়ছে। যানজট নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে ছাত্র-জনতা।
গতকাল সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে সকাল থেকে তীব্র যানজট দেখা দেয়। অফিসগামী ও অফিস ছুটির সময়ে সে চাপ সড়কে বেসামাল পরিস্থিতি তৈরি করে। বৃষ্টির কারণে সড়কে চরম জনভোগান্তি দেখা দেয়। ইমরান নামে এক যাত্রী জানান, রামপুরা থেকে পল্টন যেতে তার সময় লেগেছে ২ ঘণ্টা। অন্য সময় বাইক নিয়ে পল্টন যেতে ১০ মিনিট সময় লাগত। রাব্বী নামে এক যাত্রী জানান, বিকাল ৫টার দিকে সদরঘাট থেকে বাসে ওঠেন। পল্টন মোড়ে আসতে দুই ঘণ্টা সময় লেগেছে। জানা গেছে, সংকটময় মুহূর্তে ট্রাফিক পুলিশ শূন্য নগরীতে ছাত্র প্রতিনিধি, সমন্বয়ক, সেনাবাহিনী, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস, বিএনসিসিসহ ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতা করা সব পর্যায়ের প্রতিনিধির সঙ্গে দিনভর যোগাযোগ ও সাক্ষাৎ করে সোমবার থেকে পুরোদমে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা স্বাভাবিক করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
ডিএমপির গুলশান ট্রাফিক বিভাগের ডিসি আবদুল মোমেন বলেন, গুলশানের তিনটি স্থানে পোশাকে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা কাজ শুরু করেছেন। গুলশান-১, ২ ও কাকলী মোড়ে। এখানে ছাত্ররা আমাদের সহযোগিতা করছেন। সেনাবাহিনী ও বিজিবি সার্বক্ষণিক সহযোগিতায় টহলে রয়েছে। কাল (সোমবার) থেকে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব কাঁধে নিচ্ছে ট্রাফিক বিভাগ। এ কয়েকদিন ছাত্র-জনতা যেভাবে ট্রাফিকিংয়ের দায়িত্বটা সামলেছে সেজন্য সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তিনি।
এ বিষয়ে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, রাজধানী ঢাকায় কিছু সড়কে দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা। ধীরে ধীরে ঢাকার সব সড়কে কাজ শুরু করবেন তারা। আমাদের ট্রাফিকে জনবলের সমস্যা নেই।