১৯৫৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০০৭ পর্যন্ত ১৩টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। বিগত প্রায় ১৮ বছরে আর কোনো আবাসন প্রকল্প গ্রহণ করেনি। উল্টো সিডিএর অবহেলায় নাগরিক সুবিধা না থাকায় তিনটি প্রকল্প দীর্ঘদিন অবহেলায় পড়ে আছে। ফলে আবাসনের চাহিদা থাকলেও গড়ে ওঠেনি কোনো বসতি। অভিযোগ আছে, গত ১৬ বছরে সিডিএ সড়ক সম্প্রসারণ, নতুন সড়ক, ফ্লাইওভার ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করেছে। এসব প্রকল্পে নানাভাবে অনিয়ম হওয়ার সুযোগ আছে। ফলে সিডিএর মনোযোগও ছিল বড় বড় প্রকল্পে।
আজ বিশ্ব বসতি দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য ‘তরুণদের সম্পৃক্ত করি, উন্নত নগর গড়ি’। বিশ্বজুড়ে নিরাপদ নগর এবং মানসম্মত বাসস্থান বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে ১৯৮৫ সালে জাতিসংঘ থেকে বিশ্ব বসতি পালনের সিদ্ধান্ত হয়। ১৯৮৬ সাল থেকে দিবসটি বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে। দিবস উপলক্ষে সিডিএ নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে। সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, সিডিএর বর্তমানে ১৩টি আবাসন ও তিনটি ফ্ল্যাট প্রকল্প আছে। তবে নানা কারণে দীর্ঘদিন নগরে আবাসন প্রকল্প নেওয়া হয়নি। তবে এবার নতুন করে কয়েকটি আবাসন প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আশা করি এসব প্রকল্পে নতুন করে অনেক মানুষের আবাসন ব্যবস্থা হবে। সিডিএ সূত্রে জানা যায়, নগরে বছরে গড়ে ১০ শতাংশের বেশি হারে মানুষ বাড়ে। গত ১০ বছরের ব্যবধানে নগরের জনসংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে।
এত বিপুল সংখ্যক মানুষের আবাসন গড়ার মতো ব্যবস্থা নগরে নেই। কিন্তু সরকারি সংস্থাটির দৃশ্যমান কোনো তৎপরতাও দেখা যাচ্ছে না। অথচ গত ১৮ বছরে নগরে কোনো আবাসিক এলাকা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সর্বশেষ ২০০৭ সালে ১ হাজার ৯৮৬টি প্লট নিয়ে হাটহাজারী এলাকায় অনন্যা আবাসিক-২ প্রকল্প গ্রহণ করলেও সেটি বাতিল করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সিডিএ মোট ৬ হাজার ৩৬৪টি প্লট বরাদ্দ দিয়েছে।
অন্যদিকে সিডিএ প্রতিষ্ঠার পর ১৯৬৩ সালে ৫৮টি প্লট নিয়ে প্রতিষ্ঠা করা কাতালগঞ্জ আবাসিক এলাকা, ১৯৬৫ সালে ৩৯১টি প্লট নিয়ে তৈরি করা হয় আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকা, ১৯৭৩ সালে ৭৫৯টি প্লট নিয়ে করা হয় চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা, ১৯৭৭ সালে ১৬৮টি প্লট নিয়ে করা হয় কর্নেল হাট সিডিএ আবাসিক এলাকা, ১৯৮৪ সালে ৯০৪টি প্লট নিয়ে করা হয় সলিমপুর সিডিএ আবাসিক এলাকা, ১৯৯৫ সালে ৫১৭টি প্লট নিয়ে করা হয় কর্ণফুলী আবাসিক এলাকা, ২০০০ সালে ১৮০টি প্লট নিয়ে করা হয় চন্দ্রিমা আবাসিক এলাকা, ২০০২ সালে ৮২টি প্লট নিয়ে তৈরি করা হয় চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা (দ্বিতীয় পর্যায়), ২০০৬ সালে ৪২৩টি প্লট নিয়ে করা হয় কল্পলোক আবাসিক এলাকা (প্রথম পর্যায়), ২০০৭ সালে ১৩৫৬টি প্লট নিয়ে নির্মাণ করা হয় কল্পলোক আবাসিক এলাকা (দ্বিতীয় পর্যায়), ২০০৮ সালে ১৪৭৮টি প্লট নিয়ে নির্মাণ করা হয় অনন্যা আবাসিক এলাকা-১, প্লটের সংখ্যা ১৪৭৮টি ও ২০০৯ সালে ৪৮টি প্লট নিয়ে নির্মাণ করা ষোলশহর পুনর্বাসন এলাকা।