খুলনার উপকূলীয় দাকোপ, বটিয়াঘাটা ও পাইকগাছার প্রায় ৩৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। জোয়ারের পানির চাপে প্রতিমাসেই কয়েকবার বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। সর্বশেষ গত ১৯ অক্টোবর রাতে দাকোপের পানখালী এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লক্ষ্মীখোলা ও কামারবাদ গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়। এতে আমন ধানের খেত, ফসলি জমি, ঘরবাড়ি-পুকুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ মেরামত করলেও যে কোনো মুহূর্তে আবার ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর আগে গত ২৩ আগস্ট নদীর পানির প্রবল চাপে পাইকগাছার দেলুটি কালিনগর বাঁধ ভেঙে কালিনগর, সৈয়দখালী, হরিণখোলা, দারুলমল্লিক ও সেনেরবেড়সহ ১৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়।
দাকোপ পানখালী ইউপি চেয়ারম্যান শেখ সাব্বির আহমেদ জানান, পানখালী লক্ষ্মীখোলার পিচের মাথার বাঁধে ২০০ মিটার জায়গা ধসে গেলে লোনাপানিতে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। বাঁধ দীর্ঘদিন ঝুঁকিপূর্ণ থাকলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেয়নি। গ্রামবাসী ভেঙে যাওয়া বাঁধ মেরামতে মাটি, বাঁশ, জিওব্যাগ দিয়ে কোনোমতে মেরামত করলেও কয়েকটি স্থানে আবারও ফাটল দেখা দেওয়ায় ভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে। দাকোপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসমত হোসেন বলেন, তিলডাঙ্গা এলাকায় বাঁধের ভাঙন বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড খুলনার (পওর বিভাগ-২) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম জানান, দাকোপ, বটিয়াঘাটা ও পাইকগাছার প্রায় ৩৫ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এর মধ্যে ২৩টি পয়েন্টে ছয় কিলোমিটার জায়গায় মেরামত কাজ চলছে। তিনি বলেন, টেকসই বাঁধ নির্মাণ করতে ৩১ নম্বর পোল্ডারের (দাকোপের পানখালী, তিলডাঙ্গা ও চালনা পৌরসভা) ফিজিবিলিটি স্টাডি কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে ডিজাইনের কাজ চলছে। এখানে ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হবে।