ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও চালকের বেপরোয়া গতির কারণে খুলনার রূপসা- আফিলগেট শহর বাইপাস সড়কে অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা। সর্বশেষ ৮ অক্টোবর রাতে সড়কের লবণচরায় টেক্সটাইল কলেজের সামনে দুর্ঘটনায় প্রান্ত শেখ (১৯) নামে এক তরুণের মৃত্যু হয়। পুলিশ জানায়, রূপসা ব্রিজ এলাকা থেকে বন্ধুদের সঙ্গে বাড়ি ফেরার পথে প্রান্ত মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গ্যাসবোঝাই একটি ট্রাকের নিচে চলে যান। ট্রাকটি তার দেহের ওপর দিয়ে চলে গেলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। একই সড়কে বালুবোঝাই বেপরোয়া গতির ট্রাকের ধাক্কায় পরপর কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটে। এসব যানবাহনের অধিকাংশের ফিটনেস নেই ও অদক্ষ চালক দিয়ে চালানো হয়।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) তথ্যানুযায়ী, খুলনার বিভিন্ন রুটে ফিটনেসবিহীন ৭ শতাধিক যানবাহন চলাচল করছে। প্রশাসনের সঙ্গে আঁতাত করে চলা লক্কড়ঝক্কড় এসব যানবাহনে বাড়ছে মৃত্যুঝুঁকি। নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) ও বিআরটিএর পরিসংখ্যানমতে, চলতি বছরের (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) গেল নয় মাসে খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় ৫৬৮টি দুর্ঘটনায় ৫১৪ জন নিহত হন। আহত হন আরও ৫৬১ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি যশোরে ১২০ সড়ক দুর্ঘটনায় ১০৭ জন নিহত হন। খুলনায় ২৭ দুর্ঘটনায় ৩২ জন নিহত ও ২৪ জন আহত হন।
নিসচার খুলনা মহানগরী সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান মুন্না বলেন, ‘ফিটনেসবিহীন গাড়ি, অদক্ষ চালক, বেপরোয়া গতি, চালকের বিশ্রামহীন গাড়ি চালানো, ঝুঁকিপূর্ণ সড়ক ও নিয়মিত অভিযান না থাকায় এত দুর্ঘটনা ঘটেছে। সড়ক পরিবহন আইন সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে দুর্ঘটনা হ্রাস পাবে।’
জানা যায়, ২০১৮ সালে শিক্ষার্থীরা সড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও চালকের লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানো বন্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করেন। কিন্তু দীর্ঘদিনেও ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়নি। বর্তমানে খুলনায় ফিটনেসবিহীন ৪২টি বাস, ২৫টি মিনিবাস, ১৭টি ট্রাক, ৫৪টি কাভার্ড ভ্যান, ৪৩৪টি অটোরিকশা, ৫৯টি মাইক্রোবাস, আটটি প্রাইভেট কার, ছয়টি পিকআপসহ ৭ শতাধিক যানবাহন চলাচল করছে। বিআরটিএ খুলনার সহকারী পরিচালক প্রকৌশলী তানভীর আহমেদ বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ ফিটনেসবিহীন যানবাহনের তালিকা বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ফিটনেসবিহীন গাড়ির চলাচল বন্ধ করা হবে।’