ঢাকার গুলশানের লেকশোর হোটেলে গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হল চাইল্ড পার্লামেন্টের ১৭তম অধিবেশন। ‘শিশু সুরক্ষায় রাজনৈতিক অঙ্গীকার’ শীর্ষক এ আয়োজনে অংশ নিলেন দেশের ৬৪ জেলার চাইল্ড পার্লামেন্ট সদস্য এবং ১৬টি সুবিধাবঞ্চিত অঞ্চলের শিশুসহ মোট ৮৭জন শিশু প্রতিনিধি।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমী, সেভ দ্য চিলড্রেন এবং প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় এ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এ অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন রাশেদ খান মেনন এমপি, মাননীয় মন্ত্রী সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও সভাপতি ওয়ার্কার্স পার্টি; নূহ আলম লেলিন, সাবেক প্রসেডিয়িাম সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ; এস এম কামাল হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ; ড. মঈন খান, স্থায়ী কমিটির সদস্য, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল; মুয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এবং ব্যারিস্টার শামিম হায়দার পাটোয়ারী সভাপতি মন্ডলী সদস্য, জাতীয় পার্টি।
এছাড়াও অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ওরলা এ মারফী, তানিয়া নুসরাত জামান, হেড অব চাইল্ড রাইটস এন্ড প্রটেকশন এবং সেভ দ্য চিলড্রেনের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্ক পিয়ার্স ও ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর ডাঃ শামীম জাহান।
নিজস্ব মনিটরিং ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রাপ্ত সারা দেশের শিশু নির্যাতনের তথ্যগুলো তুলে ধরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন চাইল্ড পার্লামেন্টের সদস্যরা। শিশু হত্যা, ধর্ষন, যৌন হয়রানি বিশেষ করে গণপরিবহনে হয়রানি, শিশুদের প্রতি শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, বাল্যবিবাহ, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবহার, মাদকাসক্তি ইত্যাদির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দাবি জানান তারা।
এজন্য আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহারে শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবহার বন্ধের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা, শিশুর প্রতি অপরাধের ঘটনাগুলোর দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে শিশুদের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধি, রাজনৈতিক ইশতিহারে বাজেট বরাদ্দ ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা প্রদান, প্রতিবন্ধী শিশু, পার্বত্য এলাকার শিশু, পথশিশু, যৌনপল্লীর শিশু, আদিবাসী শিশুসহ সকল পিছিয়ে পড়া শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিতের সুপারিশ করা হয়।
রাশেদ খান মেনন জানান, শিশুদের জন্য জুভেনাইল কোর্টের আইন পাশ হয়েছে, শিঘ্রই এর বাস্তবায়ন হবে। এস এম কামাল হোসেন শিশু সুরক্ষায় আইন প্রনয়ণের পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দেন।
অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত বাধ্যতামূলক পরীক্ষা ব্যবস্থা তুলে দেওয়া ও আনন্দময় শিক্ষাব্যবস্থা প্রচলনের আহবান জানান নূহ আলম লেলিন। আইনে বিশেষ পরিস্থিতিতে বাল্যবিবাহের বিধান থাকা কোনাভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে মত প্রকাশ করেন ড. মঈন খান।
শিশুশ্রম বন্ধের জন্য ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত বাধ্যতামূলক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করার সুপারিশ করেন শামিম হায়দার পাটোয়ারী। শিশুদের জন্য সুনির্দিষ্ট খাতে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধির কথা বলেন মুয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ সিফাত তাফসীর