ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে দুই দেশেই বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি বেড়ে চলেছে। ইসরায়েলের হামলার শঙ্কায় রাজধানী তেহরান ছাড়তে শুরু করেছেন সেখানকার অনেক বাসিন্দা। অন্যদিকে, হামলা-পাল্টা হামলার শুরু থেকেই ইসরায়েলিরা দিন-রাতের বেশির ভাগ সময় কাটাচ্ছেন ভূগর্ভস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে (বাঙ্কার)।
এএফপির যাচাইকৃত এক ছবিতে দেখা গেছে, উত্তর তেহরানের একটি মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট। বিপরীত লেনে প্রায় কোনো যানবাহন নেই।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তেহরান ছাড়ার আহ্বানের পর মঙ্গলবার শহর ত্যাগের প্রবণতা বেড়েছে। যদিও অনেক বাসিন্দা শহরে থেকে গেছেন কারণ তাদের চলে যাওয়ার উপায় বা সুযোগ নেই।
এক বাসিন্দা বলেন, “আমার অনেক প্রতিবেশী চলে গেছেন, কিন্তু আমি রয়ে গেছি। যাব কোথায়? আমার পুরো জীবন তেহরানে কেটেছে।”
সংকটকালে গ্রামাঞ্চলের মানুষ শহর থেকে পালানোদের জন্য বাড়ি খুলে দিয়েছেন। অনেকেই নিজ গাড়িতে করে তাদের পৌঁছে দিচ্ছেন নিরাপদ স্থানে। তবে সরকারিভাবে এখনো তেহরান ছাড়ার কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। বিশ্লেষকদের মতে, এটা 'মনস্তাত্ত্বিক চাপের কৌশল' হতে পারে।
ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানায়, ১৩ জুন থেকে ইসরায়েলজুড়ে নিয়মিত সাইরেন বাজছে। ক্ষেপণাস্ত্র হামলার আশঙ্কায় জনজীবন বিপর্যস্ত। মানুষ ভূগর্ভস্থ আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে (বাঙ্কার) আশ্রয় নিচ্ছেন।
তবে ইরানের শক্তিশালী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সামনে এসব বাঙ্কার কতটা নিরাপদ— তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ইরানের হামলার পর বাঙ্কারের ভেতর আতঙ্ক ও বিশৃঙ্খলার দৃশ্য। শক্তপোক্ত দেয়াল ও ছাদ ধসে পড়েছে; মানুষ সাহায্যের জন্য ছুটছে।
ইরানের সেনাবাহিনী আগেই ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিকদের সতর্ক করে বলেছিল, দখলকৃত ভূখণ্ড ছেড়ে না গেলে বাঙ্কারও তাদের রক্ষা করতে পারবে না।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় এখন পর্যন্ত ২৪ জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশির ভাগই আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলেন না।
অন্যদিকে, ইরান দাবি করেছে তারা প্রায় ১০০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে। ইসরায়েলের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার জবাবে আরও প্রতিশোধ নেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছে তেহরান।
সোর্স: বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/আশিক