মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের আমন্ত্রণে আজ থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত দেশটি সফর করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সফরে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাবলিক ডিপ্লোমেসি উইংয়ের ডিজি শাহ আসিফ রহমান।
গতকাল বিকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে শাহ আসিফ রহমান জানান, ১১ থেকে ১৩ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল দ্বিপক্ষীয় সরকারি সফরে মালয়েশিয়া অবস্থান করবে। সফরের দ্বিতীয় দিন পুত্রজায়ায় প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠক হবে। এর পরই উভয় সরকারপ্রধানের নেতৃত্বে প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠক হবে। এ সফরে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, জ্বালানি সহযোগিতা, ব্যবসায়িক কাউন্সিল গঠনসহ মোট পাঁচটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা রয়েছে। এ ছাড়া দুই দেশের মধ্যে হালাল ইকোসিস্টেম, উচ্চশিক্ষা এবং কূটনৈতিক প্রশিক্ষণ একাডেমির মধ্যে সহযোগিতা-বিষয়ক মোট তিনটি নোট বিনিময় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শাহ আসিফ রহমান বলেন, সফরে প্রধান উপদেষ্টা একটি ব্যবসায়িক ফোরাম অর্থাৎ বিজনেস ফোরামে অংশগ্রহণ করবেন। মালয়েশিয়ায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে একটি মতবিনিময় সভায় তিনি অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। সফরে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে একান্ত বৈঠক ও প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠকে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন সেক্টরে নতুন বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ, অধিকসংখ্যক পেশাদারি নিয়োগ, শ্রমিকদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। সফরের তৃতীয় দিনে প্রধান উপদেষ্টা ইউনিভার্সিটি কেবাঙসান মালয়েশিয়া (ইউকেএম)-এর চ্যান্সেলর এবং নেগেরি সেম বিলান প্রদেশের রাজা তোয়াংকু মুহরিজ ইবনি আল মারহু তোয়াংকু মুনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। ইউনিভার্সিটি কেবাঙসান প্রধান উপদেষ্টাকে একটি সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করবে। প্রধান উপদেষ্টা একই ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তৃতা করবেন। শাহ আসিফ রহমান বলেন, প্রধান উপদেষ্টা মালয়েশিয়া সফরকালে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণ, জ্বালানি সহযোগিতা, হালাল অর্থনীতি, সেমিকন্ডাক্টর শিল্প, কৃষি, শিক্ষা ও জনযোগ অর্থাৎ পিপল টু পিপল কন্টাক্টসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অধিকতর সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হবে। এ সফরে বাংলাদেশের আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হওয়ার এবং রিজিওনাল কম্প্রিহেন্সিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপে যোগদানের আবেদন জোরালোভাবে তুলে ধরা হবে। এ ছাড়াও রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে মালয়েশিয়াসহ আসিয়ান সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে অধিকতর সক্রিয় ও কার্যকর ভূমিকা রাখার জন্য আহ্বান জানানো হবে। সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও ডেপুটি প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন। প্রেস সচিব বলেন, মালয়েশিয়া যাতে তাদের সর্বোচ্চ জনশক্তি বাংলাদেশ থেকে নেয় এ নিয়ে আলোচনা হবে। মূল ফোকাস থাকবে মাইগ্রেশন নিয়ে। দ্বিতীয় ফোকাস থাকবে বিনিয়োগে। গভীর সাগরে আমরা মাছ ধরি না বললেই চলে। মালয়েশিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে গভীর সাগরে মাছ ধরা বাড়ানো যায় কি না এটা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা কথা বলবেন।