দক্ষ নারী উদ্যোক্তা তৈরির কর্মশালা শুরু করল World Bank’s Women Entrepreneurs Finance Initiative (We-Fi)। বাংলাদেশের নারী-মালিকানাধীন ব্যবসা ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের লাভজনক সাপ্লাই চেইনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই এই প্রকল্পের লক্ষ্য। প্রজেক্টটি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে উইকানেক্ট ইন্টারন্যাশনাল এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়।
এই ভার্চুয়াল কর্মসূচির মাধ্যমে উঠে আসে কিভাবে নারীদের উদ্যোগকে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক কর্পোরেশনের ভ্যালু চেইনে অন্তর্ভুক্ত করা যায়। পুরো কর্মসূচির নাম দেয়া হয়েছে, কর্পোরেট কানেক্ট। মূলত এর লক্ষ্য হলো, নারী মালিকানাধীন এসএমই ব্যবসাকে সম্ভাব্য সুযোগের ব্যাপারে জানানো এবং ব্যবসার জন্য তাদের অন্যান্য কর্পোরেশনের সাথে সংযুক্ত করা।
ওয়ার্ল্ড ব্যাংক-এর বেসরকারী সেক্টরের বিশেষজ্ঞ হোসনা ফেরদৌস সুমি বলেছেন, "কর্পোরেট সাপ্লাই চেইনে অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ এবং মহিলা ব্যবসায়ের প্রতিনিধিত্ব বড় সংস্থাগুলিকে যেমন উপকৃত করবে, তেমনি নারী উদ্যোক্তাদের মানসম্পন্ন পরিসেবা প্রদানের দক্ষতাও বাড়িয়ে তুলবে"।
২০ ঘণ্টার এই প্রোগ্রামটিতে পিচ সেশন ও ব্যবসায়িক ম্যাচমেকিং ইভেন্টের মাধ্যমে নারী মালিকানাধীন এসএমই ব্যবসা এবং ক্রেতাদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা হবে। কর্পোরেট প্রতিনিধিরা প্রশিক্ষণ কর্মসূচীতে সহায়ক হিসাবেও অংশ নেবে।
"আমি আত্মবিশ্বাসী যে আমরা ক্রেতা এবং নারী সাপ্লায়ার উভয়েরই কাজের সংযোগ তৈরি করতে সফল হব।" বলছিলেন উইকানেক্ট ইন্টারন্যাশনাল এর সিইও এবং সহ-প্রতিষ্ঠাতা এলিজাবেথ এ ভ্যাজকেজ। “আমরা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়-এর সাথে আন্তরিকভাবে কাজ করব। এর মধ্যে রয়েছে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য প্রশিক্ষণ, ব্যবসায়িক কৌশল শিক্ষা সহ আরও অনেককিছু। আশা করি এর মাধ্যমে নারীরা জটিল কর্পোরেট ভ্যালু চেইনে সহজভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে। সবার জন্য এটি একটি বড় সুযোগ।"
"নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে নারী ব্যবসায়ীদের জন্য কর্পোরেট সংযোগ কর্মসূচীর অংশীদার হতে পেরে আমি উচ্ছ্বসিত, "বলছিলেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আতিকুল ইসলাম।
আগামী তিন বছরে, কর্পোরেট কানেক্টের লক্ষ্য ৭০০ জনেরও অধিক নারী উদ্যোক্তাকে কমপক্ষে ৪০টি বড় সংস্থার সাথে কাজ করার সুযোগ তৈরি করে দেয়া। ক্ষুদ্র ও মাঝারি এন্টারপ্রাইজ ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় প্রকল্পটি নারী মালিকানাধীন এসএমই ব্যবসা এবং কর্পোরেশনগুলির মধ্যে ব্যবসায়িক সংযোগের সুবিধার্থে একটি ন্যাশনাল সাপ্লায়ার ডাটাবেস তৈরি করছে।
গত এক দশকে নারীরা ঘরের গণ্ডি বেরিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যোগ করে যাচ্ছে তাদের অবদান। তবুও বাংলাদেশের প্রায় ৮০ লাখ ব্যবসায়ের মধ্যে ৯৯.৯৩% MSME, এর মধ্যে মাত্র ৭.২% নারী মালিকানাধীন ও পরিচালিত (এডিবি ২০১৬)। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের জিডিপি ৬.৮% এবং ২০২২ সালে ৭.২% বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা গেলে, নতুন এই নারী উদ্যোক্তারা মহামারীর অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি কিছুটা হলেও কমিয়ে আনতে পারবে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন