শুক্রবার, ২৭ মার্চ, ২০১৫ ০০:০০ টা
একটি ট্রেনেই ১০ যাত্রী পকেটমারের কবলে

ফেনী রেলওয়ে স্টেশন পরিনত হয়েছে পকেটমার ও নেশাখোরদের অভয়ারণ্যে

ফেনী রেলওয়ে স্টেশন পরিনত হয়েছে পকেটমার ও নেশাখোরদের অভয়ারণ্যে

ফেনী রেলওয়ে স্টেশন পরিনত হয়েছে পকেটমার, ছিনতাইকারী ও নেশাখোরদের অভয়ারন্যে। সীমানা প্রাচীর না থাকায় এখানে এসব অপকর্ম বেড়েছে মনে করেন সাধারণ যাত্রীরা। এদিকে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় রেলওয়ের প্রবেশদার, বিশ্রামাগারসহ  যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা পড়ে থাকায় সাধারণ যাত্রীদের পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ। 

শুক্রবার সকাল ৯টায় চট্রগ্রাম থেকে ঢাকাগামী মহানগর প্রভাতি ট্রেনে ফেনী স্টেশন থেকে উঠার সময় পকেটারের কবলে পড়েন  ফেনীর স্থানীয় সাংবাদিক সাঈদ খানের পরিবারের সদস্যসহ আরো ১০ যাত্রী। সাঈদ খানের ছেলে মাসুদ খান  জানান, ট্রেনে ওঠে তিনি দেখেন তার পকেটে মানিব্যাগ নেই ও তার মায়ের হাতব্যাগে থাকা মোবাইল নেই। ট্রেনের আরেক যাত্রী রুবেল হোসেন জানান, পকেটে থাকা তার মানিব্যাগটি নিয়ে গেছে তবে মোবাইল হাতে থাকায় রক্ষা পেয়েছে। তিনি জানান, এক ভদ্র মহিলার মোবাইলসহ এই ট্রেনের আরো প্রায় ৭ থেকে ৮ জন যাত্রীও পকেটমারের স্বীকার হয়েছেন। এই প্রতিবেদকের পকেটে থাকা মোবাইলও প্রায় ১০ মাস আগে ফেনী রেলওয়ে স্টেশন থেকে পকেটমাররা নিয়ে যায়। এই ব্যাপারে ফেনী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই  ফেনী রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীরা উঠা নামার সময় পকেটমারের কবলে পড়েন বলে জানা যায়।       

দেশের প্রথম শ্রেণির এই রেলওয়ে স্টেশনে একটি তথ্য সেবা কেন্দ্র থাকলেও সেটিতে সব সময় দেখা যায় ফাঁকা। যাত্রীদের বিশ্রামের বা ট্রেনের জন্য অপেক্ষার জন্য একটি ভিআইপি ওয়েটিং রুম, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেনির দুটি কক্ষ ও প্লাটফর্মের চেয়ারে দুইশত যাত্রী বসার ব্যবস্থা রয়েছে। তবে ভিআইপি রুমটি কখনও খোলা হয়না। আর প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর রুমের চেয়ার ভাঙ্গাচোরা। ওইসব কক্ষের টয়লেট নোংরা যা ব্যবহারের অযোগ্য। ময়লা আবর্জা পড়ে থাকলেও পরিছন্নতাকর্মীর অভাবে স্টেশনটি অপরিস্কার থাকে।  শুধু তাই নয়, এক শ্রেণির অসাধু কর্মচারী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দেখা যায় অবৈধভাবে ট্রেনের চালক ও কর্মচারীদের সাথে লেনদেন করে বিনা টিকেটে যাত্রীদের ট্রেনে তুলে দিতে ও ট্রেন থেকে প্লাটফর্ম পার করে দিতে। ব্যবসায়ি আবু বক্কর জানান, ঢাকা থেকে ফেনী আসার সময় মহানগর গৌধুলীর ফেনীর টিকেট না পেয়ে তিনি লাকসাম পর্যন্ত্ম টিকেট কাটেন। ফেনী স্টেশন পার হওয়ার সময় এক টিকেট কালেকটর তাকে আটক করে একশত টাকা আদায় করেন জরিমানা বাবদ। রশিদ চাইলে তিনি জানান, আমার নাম সুমন আমার বাড়ি মাস্টার পাড়া, বাড়াবাড়ি করবেন না, পুলিশে দিয়ে দেব। 

ফেনী রেলওয়ে স্টেশনের ইনচার্জ উপ-পুলিশ পরিদর্শক মো. মেজবাহ্ উল আলম জানান, সাংবাদিক সাঈদ খানের অভিযোগটি পেয়েছি। ট্রেনে যাত্রীদের প্রচুর চাপ থাকায় সনাক্ত করতে পারছিনা। সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছি। স্টেশন মাষ্টার, মো. মাহবুবুর রহমান জানান, পকেটমারের ঘটনাটি শুনে পুলিশের উপ-পরিদর্শককে জানিয়েছি। আর টিকেট কালেকটরসহ রেলওয়ের অন্য কোন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। রেলওয়ে স্টেশনের সীমানা প্রাচীর না থাকায় এসব অপকর্ম হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

সর্বশেষ খবর