পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের বৌদ্ধ ধর্মীয় মহাগুরু শ্রাবক বুদ্ধ সর্বজনপূজ্য শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তের ৪র্থ পরিনির্বাণ বার্ষিকী উদযাপন হয়েছে রাঙামাটি রাজবন বিহারে।
এ উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য কর্মসূচি আয়োজন করে রাজবন বিহার উপাসক-উপাসিকা পরিষদ।
বনভান্তের খ্যাতি বিশ্বজুড়ে। দীর্ঘদিন বনে বনে সাধনার মাধ্যমে অরহত্বের অলৌকিক জ্ঞান অর্জন করায় বিশ্বজুড়ে বনভান্তে নামে পরিচিত তিনি।
২০১২ সালের ৩০ জানুয়ারি রাজধানী ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে দেহত্যাগের মাধ্যমে মহাপরিনির্বাণপ্রাপ্ত হন বনভান্তে। বর্তমানে বনভান্তের মরদেহ রাজবন বিহারে বিজ্ঞান প্রযুক্তিতে সংরক্ষণে রাখা হয়েছে। তাঁর ৪র্থ পরিনির্বাণ বার্ষিকী উপলক্ষে ২৯-৩০ জানুয়ারি দুই দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য কর্মসূচি হাতে নিয়েছে রাজবন বিহার উপাসক-উপাসিকা পরিষদ।
শনিবার শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। সকাল ছয়টায় বুদ্ধ পতাকা উত্তোলণ, পরে বনভান্তের মরদেহে পুস্পাঞ্জলি অর্পণ, ভিক্ষুসংঘের প্রাত:রাশ, বুদ্ধপূজা, পূজনীয় ভিক্ষুসংঘের মঞ্চে আগমণ, ধর্মীয় সঙ্গীত পরিবেশন, পঞ্চশীল প্রার্থনা, বুদ্ধমূর্তি দান, সংঘদান, অষ্টপরিস্কার দান, উৎসর্গ, ধর্মসভা, পূজ্য বনভান্তের ধর্মীয় দেশনা, বিশেষ প্রার্থনা, আকাশ প্রদীপ উত্তোলণসহ বিস্তারিত কর্মসূচি পালিত হয়।
অনুষ্ঠানমালায় যোগ দিতে দেশ-বিদেশের অসংখ্য ভক্ত, পুণ্যার্থী ও উপাসক-উপাসিকার ঢল নামে। বিশেষ প্রার্থনায় ভক্ত, পুণ্যার্থীদের চোখের পানিতে পুরো রাজবন বিহারে নেমে আসে শোকের ছায়া পরিনত হয়।
অন্যদিকে শুক্রবার সকাল ৯টায় পূজ্য বনভান্তের মরদেহধাতুর সম্মুখে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এছাড়া রাঙামাটির লংগদু উপজেলা থেকে জমচুগ বনাশ্রম ভাবনা কেন্দ্র পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে বিশাল নৌ শোভাযাত্রা বের করে পুণ্যার্থীরা। শোভাযাত্রায় বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা প্রায় কয়েক হাজার পুণ্যার্থী ধর্মীয় পতাকা ও ব্যানার নিয়ে অংশগ্রহন করে।
এছাড়া বিকালে ধর্মসভা, মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্জ্বলন, ফানুস উত্তোলণ, পূজ্য বনভান্তের প্রামাণ্য ভিডিও চলচ্চিত্র প্রদর্শন এবং ধর্মীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
রাঙামাটি রাজবন বিহার উপাসক-উপাসিকা পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি গৌতম দেওয়ান জানান, নানা আচার, প্রার্থনা ও অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়ছে পরমপূজ্য বনভান্তের ৪র্থ পরিনির্বাণ বার্ষিকী। এ উপলক্ষে দূর-দূরান্ত থেকে আগত ভক্ত ও পুণ্যার্থীদের জন্য ব্যাপক নিরাপত্ত জোরদার করেছে পুলিশ প্রশাসন।
বিডি-প্রতিদিন/ ৩০ জানুয়ারি ১৬/ সালাহ উদ্দীন