জামিন চাইতেই মিললো মুক্তি। একটি অস্তিত্বহীন মামলার ভুয়া ওয়ারেন্টে গ্রেফতার হওয়া আব্দুস সালাম নামের এক ব্যক্তিকে মুক্তি দিয়েছেন চুয়াডাঙ্গার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ডা. এবিএম মাহমুদুল হক।
রবিবার সকালে আব্দুস সালাম চুয়াডাঙ্গার চিফ জুডিসিয়াল আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। আদালতের বিচারক জামিন নয়, পুরোপুরি মুক্তির আদেশ দেন আব্দুস সালামকে। আদেশে বলা হয়েছে, ওয়ারেন্ট এবং মামলা দুটোই ভুয়া।
চুয়াডাঙ্গা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এম শাহজাহান মুকুল জানান, ঢাকার লালবাগের ২/২ নূর ফাত্তাহ লেন (চতুর্থ তলা) এর বাসিন্দা মৃত আব্দুল আলীমের ছেলে মো. আব্দুস সালাম কিছুদিন আগে ঢাকায় পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। চুয়াডাঙ্গার আদালতের একটি ভুয়া মামলার ভুয়া ওয়ারেন্ট পুলিশের হাতে থাকায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের পর আব্দুস সালামকে ঢাকার আদালতে নেওয়া হলে তাকে চুয়াডাঙ্গার আদালতে হাজির হওয়ার শর্তে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়া হয়। ওয়ারেন্টে মামলার নম্বর উল্লেখ করা ছিল সি, আর ১২১/১৬। ধারা দন্ডবিধির ১৪৩/৩২৩/৪৪৮/৩০৭ ও ৩৭৯। ধারা অনুযায়ী মামলাটি মারামারি, হত্যাচেষ্টা ও চুরির অপরাধ। আদালতের নাম উল্লেখ করা ছিল-চুয়াডাঙ্গার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২। ওই নামে কোনো আদালত চুয়াডাঙ্গায় নেই। চুয়াডাঙ্গায় একটিই জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত আছে। সেখানে ২০১৬ সালের ১২১ নম্বর পর্যন্ত মামলা এখনো আসেনি। রবিবার পর্যন্ত ৭০/১৬ মামলা লিপিবদ্ধ হয়েছে চুয়াডাঙ্গার আদালতে।
চুয়াডাঙ্গার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে যে ওয়ারেন্টের কপি পৌঁছেছে তাতে যে সীলমোহর আছে সেখানে বিচারকের নাম উল্লেখ আছে মুন্সী আব্দুল মজিদ। এই নামে চুয়াডাঙ্গার কোনো আদালতে কোনো বিচারক নেই। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একটি চক্র প্রতিপক্ষদের হয়রানি করার উদ্দেশ্যে ভুয়া একাধিক সীলমোহর সম্বলিত ভুয়া ওয়ারেন্ট তৈরি করে নিরপরাধ মানুষকে গ্রেফতার করাচ্ছে। এর আগেও এমন আরো দুটি ওয়ারেন্ট এসেছে চুয়াডাঙ্গার আদালতে।
চুয়াডাঙ্গার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট ডা. এবিএম মাহমুদুল হক আত্মসমর্পনকারি আব্দুস সালামেকে মুক্তি দেওয়ার আদেশে বলেন, মামলা ও ওয়ারেন্ট দুটিই ভুয়া। এজন্য আত্মসমর্পনকারিকে মুক্তির আদেশ দেওয়া হলো।
বিডি-প্রতিদিন/০৩ এপ্রিল ২০১৬/ এস আহমেদ