পিরোজপুরে স্কুলছাত্র সাদমান সাকিবকে (১৪) হত্যার দায়ে দুই সহোদরকে মৃত্যু দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে পিরোজপুরের জেলা ও দায়রা জজ মো. গোলাম কিবরিয়া এ মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ইন্দুরকানি উপজেলার শফিকুল আলম হাওলাদারের ছেলে নাফিজ হাসান নাহিদ (১৯) ও তার বড় ভাই নাজমুল হাসান নাঈম (২১)।
দুই সহোদরের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ সন্দেহাতিতভাবে প্রমানিত হওয়ায় তাদের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। এছাড়া তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সাদমান সাকিব (১৪) পিরোজপুর পৌরসভার আদর্শপাড়া এলাকার জাকির হোসেন সরদারের পুত্র। সে পিরোজপুর সরকারি টেকনিক্যাল কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২৯ আগস্ট সকালে সাদমান সাকিব বাসা থেকে বের হয়ে বন্ধু নাফিজ হাসানের সিআই পাড়া বাসায় যায়। সেখানে সাদমান সাকিবের সঙ্গে নাফিজ হাসানের মধ্যে ঝগড়ার এক পর্যায়ে নাফিজ হাসান সাদমান সাকিবের মুখমন্ডলে আঘাত করেন। এতে সাদমান সাকিব খাটের ওপর পড়ে গিয়ে মাথার পিছনে আঘাত পেয়ে জ্ঞান হারিয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু বরণ করে। পরে পরিকল্পিতভাবে দুই ভাই পিরোজপুর পৌরসভার সিআই পাড়ার রায়ের পুকুরে লাশ ফেলে দেয়।
এদিকে সে বাসায় না ফেরায় পরদিন ৩০ আগস্ট সাদমানের বাবা জাকির হোসেন স্থানীয় থানায় ছেলে নিখোঁজ ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি করেন। ১ সেপ্টেম্বর ভোর ৬ টায় পিরোজপুর পৌরসভার সিআই পাড়ার রায়ের পুকুরে সাদমান সাকিবের লাশ দেখে এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেয়। এ ঘটনায় ২ সেপ্টেম্বর জাকির হোসেন সরদার বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন। পুলিশ নাফিজকে গ্রেফতার করলে সে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। আজ বিচারক দুই সহোদরকে মৃত্যুদণ্ড দেন এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
এদিকে লাশ গুম করায় দুই সহোদরকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন এবং তাদের বাবা শফিকুল আলম হাওলাদারকে বেকসুর খালাস দেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি খাঁন মো. আলাউদ্দিন বলেন, এই হত্যা মামলায় দুই সহোদরের বাবাকে খালাস দেওয়ায় তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন। আসামি পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট সিরাজুল হক।
বিডি প্রতিদিন/৭ জুন ২০১৭/এনায়েত করিম