শীতের শুরুতেই হাওরাঞ্চল হিসেবে খ্যাত হবিগঞ্জ জেলায় আসতে শুরু করেছে শীতের অতিথি। জেলা সদরসহ বানিয়াচং, নবীগঞ্জ, বাহুবল এবং আজমিরীগঞ্জ উপজেলার একাধিক জায়গায় ঝাঁকে ঝাঁকে বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখি আসতে শুরু করেছে। ভিনদেশি এসব অতিথি পাখি হয়ে উঠেছে এসব এলাকার মানুষের বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম।
ছয় ঋতুর বাংলাদেশ ভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন রূপ ধারন করে। আর প্রতিটি রূপেরই রয়েছে কিছু বিশেষত্ব। এগুলোর একটি হচ্ছে শীতকালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা পরিযায়ী পাখি। প্রতিবারের মতো এবারও শীত শুরু হতে না হতেই শীতের অতিথিরা হাজার হাজার মাইল দূর থেকে উড়ে আসতে শুরু করেছে আমাদের দেশের বিভিন্ন জেলায়। হবিগঞ্জ জেলার হাওর-বাওড়, বিলে এরই মধ্যে দেখা মিলছে তাদের। সারারাত খাবার সংগ্রহ করার পর ভোরবেলা নিজের তৈরি করা অস্থায়ী বাসস্থানে ফিরে ক্লন্তি দূর করছে অতিথি পাখির দল।
হবিগঞ্জের জলসুখা গ্রামের মছনু চৌধুরী জানান, আট বছর আগে হঠাৎ এক শীতে আমাদের বাড়ির বাগানে আসতে শুরু করে পরিযায়ী পাখি। এরপর থেকে প্রতি বছর শীত এলেই আমাদের বাড়িতে আসে। আমরাও অতিথিদের অপেক্ষায় থাকি প্রতি বছর। আমরা এসব পাখির খেয়াল রাখি। সব সময় নজর রাখি যাতে কেউ পাখি শিকার না করতে পারে।
বানিয়াচংয়ের স্কুল শিক্ষিকা শাহনাজ ইয়াসমিন জানান, আমার মেয়ে প্রথম শ্রেণি পড়ুয়া সোহা এবং চার বছর বয়সী ছেলে সিয়াম সারাদিন মেতে থাকে অতিথি পাখি নিয়ে। আমাদের বাঁশ বাগানে হাজার খানেক পাখি আসে প্রতি বছর। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি খাবার সংগ্রহের জন্য বেড়িয়ে পড়ে। আবার ভোর হতে না হতেই চলে আসে নিজের বাসস্থানে। সারাদিন পাখির কলকাকলিতে ভরে থাকে চারপাশ।
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মোহাম্মদ আলী শামীম বলেন, কয়েকদিন ধরে শহরের জেলা পরিষদ কার্যালয়, থানা, সার্কিট হাউজ এবং সদর হাসপাতালসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে ঝাঁকে ঝাঁকে আসতে শুরু করেছে অতিথি পাখি। এছাড়া এসব পাখিকে দেখার জন্য প্রতিদিন ভিড় করেন পাখিপ্রেমীরা।
আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পুলক কান্তি চক্রবর্তী জানান, শীতকাল এলেই উপজেলার হাওরের খাল-বিল জলাশয়ে বালি হাস, লেঞ্জাসহ বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখি আসতে থাকে। এবারও আসতে শুরু করেছে। দুর্বৃত্তরা যাতে অতিথি পাখি শিকার করতে না পারে সে ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন সতর্ক রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/২৮ নভেম্বর ২০১৭/হিমেল