নানা কর্মসূচীর মধ্যেদিয়ে রাঙামাটিতে হানাদার মুক্ত দিবস উদযাপিত হয়েছে।
রবিবার সকালে দিবসটি উপলক্ষে শহরের পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সামনে শহীদ এম এ আলী স্মৃতিস্তম্ব চত্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুদ্দিন আহমেদ পেয়ারা ও লেঃ কর্নেল (অবঃ) মনিষ দেওয়ান। এসময় জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডার রবার্ট রোনাল্ড ফিন্টু উপস্থিত ছিলেন।
রাঙামাটি মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাঙামাটি শত্রুমুক্ত হয়। বিজয় দিবসের একদিন পর রাঙামাটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলন করা হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। পাকবাহিনী রাঙামাটি ছেড়ে গেলেও তাদের সহযোগী ত্রিদীব রায়সহ উপজাতি মিজো বাহিনীর কিছু সেনা থেকে যাওয়ায় রাঙামাটি মুক্ত হতে সময় নেয় আরও একদিন। তাই বিজয় দিবসের পরদিন রাঙামাটির আকাশে উড়ে স্বাধীন পতাকা।
রাঙামাটি জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডার রবার্ট রোনাল্ড পিন্টু জানান, ১৯৭১ সালের মার্চে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে মে মাসে পাকসেনারা রাঙামাটি, রামগড় ও বান্দরবান দখল করে। এরপর মুক্তিযুদ্ধের ১নং সেক্টরের আওতায় সর্বপ্রথম ৫ মে ২৫ জন সদস্যের পার্বত্য চট্টগ্রামের মুক্তিযোদ্ধা দল গঠন করা হয়। এরপর শুরু হয় পাকবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ। ১৫ ডিসেম্বর মিত্র ও মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা বরকলে পাকবাহিনীর উপর আক্রমণ শুরু করে। যৌথবাহিনীর রকেট লাঞ্চার ও এলএমজি থেকে অনবরত গুলি চালিয়ে যেতে থাকে। পাক সেনারা যৌথবাহিনীর ওপর সেলিং করতে থাকে। যৌথবাহিনীর আক্রমণে টিকতে না পেরে পাক সেনারা পিছু হটে এবং মিত্র ও মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা অগ্রসর হয়ে রাঙামাটি দখল করে নেয়।
রাঙামাটিতে প্রথম পতাকা উত্তোলনকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল (অবঃ) মনিষ দেওয়ান বলেন, মুক্তি বাহিনীর সাথে মিজো বাহিনী টিকতে না পেরে রাঙামাটি ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়। ১৭ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের একদিন পর রাঙামাটি সম্পূর্ণ শক্রমুক্ত হয়। ওই দিনেই পুরাতন কোর্ট বিল্ডিং এর কার্যালয়ের সামনে আমরা প্রথম স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করি। পরে মিত্রবাহিনীর পূর্বাঞ্চল কমান্ডের অধিনায়ক জেনারেল সুজন সিং ও শেখ ফজলুল হক মনি ভারতীয় হেলিকপ্টার যোগে ১৮ ডিসেম্বর রাঙামাটির পুরাতন কোর্ট বিল্ডিং মাঠে বর্তমান শহীদ শুক্কুর ষ্টেডিয়ামে অবতরণ করেন। সেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। সেদিন স্বজন হারাদের ব্যথা ভুলে হাজার হাজার উৎফুল বাঙালী রাস্তায় নেমে আসে। জয় বাংলার স্লোগান দেয়।
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন