জেল থেকে বাড়ি ফেরার দিনে মিষ্টি খাবার কথা বলে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল প্রতিবেশি ছাত্রলীগ নেতা। পরে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পিটিয়ে আহত করে। ১০ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গতকাল বৃহস্পতিবার মারা গেছে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান যুবলীগ নেতা তৌহিদুল ইসলাম তৌহিদ সানা। পুলিশ বলছে, তার বিরুদ্ধে ২২ টি মাদক মামলা ছিল।
হত্যার ঘটনায় তৌহিদ সানার বোন রিনা রহমান ছয়জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দিয়েছেন। তৌহিদ সানা আশাশুনির বড়দল গ্রামের প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিক সানার ছেলে।
বৃহস্পতিবার রাতে খুলনার হাসপাতাল থেকে নিজ বাড়ি সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বড়দল গ্রামে নিয়ে আসা হয়। এ সময় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারনা ঘটে।
স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানিয়েছে, ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি তৌহিদ সানার বিরুদ্ধে থানায় একটি মাদক মামলা হয়। এই মামলায় মাস তিনেক আগে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গত ২৬ মার্চ জামিনে জেল থেকে মুক্ত হন তৌহিদ।
তৌহিদ সানার পরিবার জানিয়েছে, বাড়ি ফেরার পর তৌহিদ বড়দল বাজারের একটি দোকানে বসে ছিলো। এ সময় তার পরিচিত প্রতিবেশি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি নাহিদ রানা বাবু সন্ধ্যার দিকে তাকে মিষ্টি খাওয়ানোর কথা বলে ডেকে নিয়ে যায়। কিছু সময় পর ছাত্রলীগ নেতা নাহিদ তার সহযোগী কাজল সানা, আইউব আলি মালি, টুটুল সানা ও ইয়াসিন সরদার তৌহিদ সানার ওপর হামলা করে। তারা তৌহিদ সানাকে লোহার রড, হাতুড়ি ও লাঠিসোটা দিয়ে বেপরোয়াভাবে মারপিট করতে থাকে। জীবন বাঁচাতে তৌহিদ দৌড়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান আবদুল আলিমের বাড়িতে পৌঁছে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয় খুলনার একটি বেসরকবারি হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার মৃত্যু হয় তার।
তার পারিবারিক সূত্র আরও জানিয়েছে, তৌহিদ স্থানীয় মাদকসেবীদের পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছিল। এ কারণে তৌহিদের ওপর নাহিদ, কাজল, আইউব, ইয়াসিন ও টুটুল সানা ক্ষিপ্ত ছিল। তারাই তৌহিদকে পিটিয়ে হত্যা করে।
জানতে চাইলে আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার নাথ জানান, তৌহিদ সানা ২২টি মাদক মামলার আসামি। গত বছর অক্টোবর সাসে সে গ্রেফতার হবার পর গত ২৬ মার্চ জামিনে বাড়ি আসে। এ দিন তাকে কয়েক যুবক পিটিয়ে আহত করে। তৌহিদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা